ড. সীনা আক্তার

সমাজবিদ এবং প্যারেন্টিং পেশাজীবি

সত্যি বলতে সেদিন আমি ভীষন ভয় পেয়েছিলাম।

তিনি তখন একজন ছোট মন্ত্রী, পুরুষ। আমি বিদেশী সংস্থায় কাজ করি, অফিসের কাজে এপয়েন্টমেন্ট করে সচিবালয়ে তাঁর অফিসে গিয়েছিলাম, সম্ভবত সেটা আমার দ্বিতীয় ভিজিট ছিলো। সেই অফিসের সবাই যেন আমাকে ভিআইপি মর্যাদা দেবার জন্য প্রস্তুত হয়েই ছিলো! পৌঁছে রিপোর্ট করার সাথে সাথেই তাঁকে জানানো হলো। কিছুক্ষনের মধ্যেই আমার ডাক পড়লো।

সেখানে কয়েকজন ভিজিটর ছিলেন, তিনি দ্রুত তাদের বিদায় করলেন। আমার জন্য চা/কফি এলো...। আমাকে ধারনা দেয়া হলো যে তাঁর কাছে ভিজিটর আসতেই থাকবে এবং তাতে আমাদের অফিসিয়াল আলোচনায় ব্যাঘাত ঘটবে, তাই তিনি বললেন, 'চলেন ভেতরে গিয়ে বসি' এবং উঠে সেদিকে হাটা দিলেন।

আমি পেছনে। ভেতরে তিনি একটা সোফায় বসলেন এবং আমাকে পাশেই আরেকটা সোফায় বসতে বললেন। আমি তখন কিছুটা হতভম্ব কারণ সেটা একটা ছোট কামরা, সেখানে মাত্র দুটো সিঙ্গেল সোফা এবং একটি সিঙ্গেল বিছানা। কোনো অফিসে যে এই ব্যবস্থা থাকে তা আমি প্রথম দেখলাম এবং জানলাম।

আমার অপ্রস্তুত অবস্থা দেখে তিনি আমাকে আবার বসতে বললেন। কিন্তু আমি তখন এ্যামিবার (Amoeba) মতো নিজের চারিদিকে সুরক্ষা প্রাচীর তৈরিতে এবং কৌশল ঠিক করতে ব্যস্ত। তিনি যত গদ গদ সুরে আমার গুণের কথা বলেন আমি তত দৃঢ় গলায় অফিসিয়াল আলোচনায় ফোকাস থাকি ...। সত্যি বলতে সেদিন আমি ভীষন ভয় পেয়েছিলাম।

 পরে তিনি আমাকে তার মন্ত্রণালয়ে চাকুরীর অফার দিয়েছিলেন। সঙ্গত কারণেই আমি রাজি হইনি কিন্তু তিনি হাল ছাড়েন নি। আমাকে রাজি করানোর জন্য আমার এক গুরুজনকে দিয়ে সুপারিশও করিয়েছিলেন। 

 

2496 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।