সুষুপ্ত পাঠক

বাংলা অন্তর্জালে পরিচিত "সুষুপ্ত পাঠক" একজন সমাজ সচেতন অনলাইন একটিভিস্ট ও ব্লগার।

ভারতে তিন তালাক দিলেই তিন বছরের জেল!

ভারতে তিন তালাক দিলেই তিন বছরের জেল! আধুনিক সভ্য মন-মানসিকতার কাছে এটি ইসলামের গালে এক কঠিন চপেটাঘাত। ভারতীয় মুসলিম নারী আন্দোলনকারীরা পরস্পর মিষ্টি মুখ এই করিয়েছে আইন পাশে। গোটা বিষয়টির সঙ্গে ইসলাম ধর্ম জড়িত ছিলো বলেই ভারতীয় বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন, নেতা, আলেম তিন তালাকের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলো। তারা ইসলামী শাস্ত্রকে সাক্ষি মেনে বলেছিলো, তিন তালাক মুসলমান পুরুষের অধিকার…।

ভারতীয় মুসলমান নারীদের এটি ঐতিহাসিক বিজয়। শরীয়ার করালগ্রাস থেকে এবার তারা রাষ্ট্রে দারস্থ হতে পারবে। ভারতের নারীদের আরো একটি আলোচিত ধর্মীয় সংস্কার ঘটেছে এ বছর। যদিও সেটা পুরোপুরি ইসলাম ধর্মের নারীর পর্দা বিরোধী। যেসব নারী হজ করতে যান তারা গোড়া মুসলিম। ইসলামের খাঁচাকেই তারা তাদের জান্নাতের সার্টিফিকেট বলে মনে করেন। নারীরা হজের মতো তীর্থ করতেও একা যেতে পারবে না। ইসলাম নারীকে পূর্ণাঙ্গ মানুষ বলে মনে করে না বলেই একা ভ্রমণ এই ধর্মে নিষিদ্ধ।

ভারত সরকার আগামী বছর থেকে ভারতীয় নারীদের একা হজ করতে যাবার প্রস্তাব করেছে। এই ঘোষণা ভারতীয় নারীবাদী সংগঠনরা নারীর এক ধরণের অগ্রগতি হিসেবে দেখছে। কিন্তু ভারতীয় মুসলিম ধর্মীয় সংগঠন, বিশিষ্ট আলেম ওলামারা সরকারের এই প্রস্তাবকে শরীয়া বিরোধী বলেছে কারণ এতদূরে নারীকে একা যেতে ইসলাম অনুমোদন দেয় না। ইসলাম মতে নারী কেবল তার মাহরাম অর্থ্যাৎ স্বামী, পুত্র এবং যে আত্মীয়ের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক হয় না তাদের সঙ্গে সফর করতে পারবে। মানে দাঁড়াচ্ছে নারী এই তিন সম্পর্কের বাইরে ঘরের বাইরে বের হওয়াই ইসলামের চোখে অপরাধ। অথচ টিভিতে হিজাব পরে কত নারী চেঁচায়- ইসলামই প্রথম নারী স্বাধীনতার কথা বলেছে! এই হচ্ছে সেই স্বাধীনতার নমুনা…!

ভারতে এই মুহূর্তে ক্ষমতায় রয়েছে হিন্দুত্ববাদী দল। কংগ্রেস, বামফ্রন্ট, তৃণমূল এরা কেউ কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকলে মুসলিম পারিবারিক আইনে কি হাত দিতো? তিন তালাকের মতো নারী নিপীড়নের হাতিয়ারকে তারা রুখে দিতে চেষ্টা করতো? বরং পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলা চলে তারা মাদ্রাসা শিক্ষায় অর্থ ঢেলে তিন তালাক আর শরীয়া আইন চর্চাকারীদের ভারতীয় মুসলমানদের উপর ছড়ি ঘোরাতে ঘাড়ে-গর্দানে মোটাতাজা করে চলতো।

কি দুঃখজনক, যাদের প্রগতিশীলতার পক্ষে থাকার কথা ছিলো তারাই ভোটের রাজনীতিতে ধর্মীয় মোল্লা পুরোহিতদের খুশি করে চলে। ভারতের মুসলিম ভোট ধরতে তাদের ইসলামী সেন্টিমেন্টকে চুলকে দিয়ে ভোটের হিসাব নিজেদের দিকে টেনে নিতে চায়। মুসলমানদের সত্যিকারের যারা ধ্বংস চায় তারাই মুসলমানদের জন্য কুরআর-হাদিস শিক্ষার প্রসার ঘটায়। এক হাজার বছরেও মুসলমানদের উন্নতি হবে না যদি না তাদেরকে ধর্মীয় আবহ থেকে দূরে রাখা সম্ভব না হয়।

5093 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।