আকাশ লীনা

ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্ট

শিশু ধর্ষণ হয়ে উঠেছে গা সওয়া- নৈমিত্তিক ঘটনা

নাক, মুখ কেটে ফেলা ক্ষতবিক্ষত ছবিটা দেখে শরীরে তীব্র একটা ঝাঁকুনি দিয়েছিলো। ঠোঁট এক কোনে কোনোরকমে ঝুলে আছে। বটির আঘাতে ছিন্ন হয়ে মাংস কেটে দাঁতগুলো রক্তাক্ত। এলোপাথাড়ি কোপানো হয়েছে সারা মুখে। দলা দলা ছোপ ছোপ রক্ত লেগে আছে নিথর দেহটাতে। কেঁপে ওঠা ঠান্ডা শরীরের প্রতিটি রোম দাঁড়িয়ে গেলো। এ কি করে সম্ভব!বিভৎস!...

শিমু আক্তার। বয়স ১০ বছর। মাদ্রাসার ছাত্রী। ধর্ষণ করা হয়েছিলো শিমুকে। ধর্ষকদের চিনে ফেলায় দাঁ-বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। ধর্ষণের জন্য পোষাককে দায়ী করা মুমিন মুসলামানেরা এই ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডকে কি বলবেন! কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে গেল সোমবার ঘটেছে এমন পৈশাচিক হত্যাকান্ড।

মামাবাড়িতে কীর্তন শুনতে গিয়েছিলো ষষ্ঠ শ্রেণির মেয়েটি। মামাদের সামনে থেকে মেয়েটিকে তুলে নিয়ে নির্জন কাঁটাবনে ধর্ষণ করা হয় বাচ্চা মেয়েটাকে। ভিডিও ধারণ করা হয়েছিলো সেদিন। লোক জানাজানি হলে হত্যার হুমকী দেয়া হয় সপরিবারে। এলাকা ছাড়ার জন্য নানাভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে।

৭ বছর বয়সী শিশুটা বাড়ি ফিরছিলো হোলি খেলে। ৪৫ বছর বয়সী শুকুর আলী এক প্যাকেট বিস্কুটের লোভ দিয়ে নির্জনে নিয়ে ধর্ষণ করে শিশু মেয়েটাকে। আশংকাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে মেয়েটা। দিনমজুর বাবা-মা দ্বারেদ্বারে ঘুরছে সুচিকিৎসা এবং আইনগত সহায়তার জন্য।

ধর্ষণের নতুন ধারাটি লক্ষ্য করেছেন কি? একটু দেখলেই বুঝবেন। ধর্ষিতরা সবাই শিশু। এগুলো গত এক সপ্তাহের ঘটনা। এরা ছাড়াও আরো ৪টি শিশু ধর্ষিত হয়েছে। ধর্ষণের বিচার এইদেশে প্রায় দুষ্প্রাপ্য। আপনি সংখ্যাগুরু হলে ধর্ষণের বিচার চাইতে পারেন। কিন্তু সংখ্যালঘু হলে ধর্ষিতা শিশুসন্তানকে নিয়ে এলাকা এবং ক্ষেত্রবিশেষে দেশ ছাড়তে হচ্ছে। বিচার চাইতে গেলে কতটা নাজেহাল হতে হয় সে শুধু ভিকটিমের পরিবারই জানেন।

নাস্তিকদের ফাসীর দাবিতে এদেশে আন্দোলন হয়, রাজাকারের মুক্তির দাবিতে এদেশে আন্দোলন হয়, ভাস্কর্য-মুর্তি অপসারণের জন্য এদেশে আন্দোলন হয়, সুন্দরবন বাঁচাতে আন্দোলন হয়, বৃক্ষ বাঁচাতে আন্দোলন হয়, পরমানু বিদ্যুত প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়। সিরিয়াতে হামলা হলেও আমরা জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস প্রসব করে আন্দোলন করি। কিন্তু ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য রাজপথ খালিই পড়ে থাকে!

ব্যাপার না! নিজের ঘাড়ে না আসলে বাঙালী বোঝে না। তবে অপেক্ষাই করুন, কবে আপনার পরিবারের কেউ ধর্ষিত হবে.... 

#ধর্ষকেরবিচারচাই

#SayNoToRape

#RealManDontRape

#NoMercyForRapists

1469 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।