১
শুক্রবারকে আমি কী করতে পারি?
বড়জোর অভিশাপই দিতে পারি!
হে শুক্রবার, তোমারো মিসিং ইউ ম্যাডলি
অসুখ করুক, কিন্তু তুমি সংসারী হও
তার মত...
২
সে বললো, ভালোবাসি
আমি বললাম, ভালোবাসি-
তারপর চুমু খেলাম।
এরপর আমি বললাম, পৃথিবী কী মায়াময়
সে বললো, পৃথিবী কী মায়াময়!
আমি বললাম, সন্ধ্যেটা বুক কাঁপানো
সে বললো, সন্ধ্যেটা বুক কাঁপানো
আমি বললাম, চল চলে যাই
সে বললো, কোথায়?
আমি বললাম, আমাদেরও ঘর হবে
সে বললো, পরের জন্মে, আপাতত মাগুর মাছ, সজনে
আর কাগজী লেবু কিনতে
যেতে হবে আগোরার দিকে
বৌ আজ সরষে দিয়ে কষে
রাঁধবে ইলিশ, দেখি
একখানা পাই কিনা বড় দেখে....
৩
মেয়েটার বাপ মরেছিলো
মা মরেছিলো
ভাই বোন পরমাত্মীয় এবং অবশেষে
স্বামী।
মেয়েটা জানাজায় দাঁড়ায়নি কোনোদিন
মেয়েটাকে কেউ গোরস্থানে ডাকেনি কোনোবার
কবর খুঁড়ে তাদের শুইয়ে এসেছিলো ওরাই
মেয়েটা ঘরের অন্ধকারে
বসেছিলো চুপ
ওরা তার কানে হুকুম দিয়েছিলো ঢেলে
মোলায়েম স্বরে
'দোয়া কালাম পড়'-
মেয়েটা পড়েছিলো।
স্বামীর মৃত্যুবার্ষিকীতে মেয়েটা
রোজা রাখতে চেয়েছিলো, নামাজ
পড়বে ভেবেছিলো
মাসিকের রক্ত দেখে
সব ভন্ডুল হলো,
পুরো দিনটা মেয়ে
বসে রইলো সেই পুরোনো ঘরের
ততধিক পুরোনো অন্ধকারের গভীরে।
ওরা তাকে হুকুম দিলো ফের
'মুখে মুখে দোয়া পড়'
মেয়েটা পড়লো।
তারপর গভীর রাতে
জানালার পাশে বসে
ঈশ্বরের সাথে দেখা হলো তার-
মেয়েটা বললো, "নিজেকে
মরা মাছের আশেঁর মতো
গন্ধযুক্ত লাগে, মাছি বসা
পোকার মতো লাগে
ঘিনঘিনে ঘায়ের মতো
লাগে কেনো হে ঈশ্বর!"
ঈশ্বর চলে গেলো।
৪
প্রেমে পড়লে পুরুষ ভালো হয়ে যায়
পুরুষ থেকে প্রভুভক্ত প্রাণী-
এরকম রূপ পালটায়;
আহ্লাদে কুকুর যেমন
দু’পায়ে ভর দিয়ে বসে
লেজ নাড়ায়
প্রেমে পড়লে পুরুষ তেমন বসে
জিভখানা বের করে অনর্থক হাসে
তাই দেখে বিভ্রান্ত মেয়ে
কাছে আসে।
তারপর কুকুরটি ক্রমে শৃগাল হয়ে যায়
অবসরে ওত পাতে পাশের বাসায়
মুরগির আশায়-
প্রেম জমলেই পুরুষের তেজ আর সন্ন্যাস বাড়ে
সমানুপাতিক হারে
তারপর সে একদিন
জংগলে ফিরে যায়...
৫
প্রেমিক সেজে হামলে পড়ে চুমু
খেতে চেয়েছে
তবু তো তাকে প্রেমিকই বলেছি।
প্রতারক জেনেও অন্ধের মতো হাত
বাড়িয়ে দিয়েছি
চুম্বনের সাথে সে প্রতারণার
বিষ দিয়েছে ঢেলে।
এত সব সুতীব্র ইতিহাস সাথে নিয়ে
কত কত পথ ঘাট মাঠ প্রান্তর
আমি পেরিয়ে এলাম
অথচ এই সন্ধ্যায়, গুমোট মেঘের ভিতরে
দূর থেকে তোমার স্বর ভেসে আসে -
চুম্বন এত স্থির, ধ্যানমগ্ন, শান্ত, বেদনাময়
এত সাধনা আর পরাভবের ভিতরেও যে
সে বারবার বিজয়ী হয়ে উঠতে পারে ...
তোমাকে না জানলে
কত কীই যে না জানার থেকে যেত আমার!