রিমঝিম আহমেদ

লেখক।

রিমঝিম আহমেদ-এর কবিতা

 

ইল্যুশন

আমাকে ডাকছ তুমি, অথবা ডাকছই না। যেন
বর্ণমালা ছিঁড়ে ফেলা শিশু—মলাটের
রঙ খুলে 
এঁকে গেল অবিদ্যার গুণ। যে শিল্পিত অস্বীকারে
জলগামছাটা ধুয়ে আসো দ্বারকেশ্বরের জলে
হয়তো আমিও যাব, গ্রাম শেষে সরুপথ— আর
অশ্বত্থে হেলান দিয়ে একগ্লাস জল চেয়ে নেব

অশান্তির হাওয়া বয়, জলসুরে বাজে কি মল্লার!
ফুরায় আনন্দতর্ক, পতঙ্গনৃত্যের মজলিস 
উদাসী স্তনের ছায়া উপনদ ঘেঁষে থেমে যায় 

সান্দ্র ঘুমে খুলে যাচ্ছে  পরিপাটি বুকের সেলাই



হলুদ মেঘের ধুলো

 যেখানে ঘুমিয়ে আছ সুঁইচোরা পাখি
যুগ্মপাখা রেখে দাও অস্তধূমে ঢেকে
এখন সময় বড়  প্রখর হেঁয়ালি 
নররাক্ষসের খিদে খুলিতে লেগেছে

লণ্ঠনে ঘামছে নীল রাত্তির আঁধার  
পৃথিবীর ঠোঁটে লেখা শেষ কবিতাটি
অনবদ্য সন্ধ্যা চিরে বরাভয়ী ঝিরি
গাঢ় হয়ে নেমে যায়  তিসিফুলবনে

দৃশদ্বতী তীরে কার আঙুল হারিয়ে? 
চোখভরা দৃশ্য নিয়ে ঘরে ফিরেছিল
পথের শিশুটি আজও পথ আঁকে নখে
সেই পথে খুঁজে নেবে ফের কোনো  পথ

সব পথ ঢেকে যাবে ঘাসের জঙ্গলে
চাঁদ ভেসে মরে যাবে দুপুরের খেতে
মানুষের পদচিহ্নে  পীপিলিকা বন
ইতিহাস থাকে যদি পাথর ফলকে

হলুদ মেঘের ধুলো ময়ূর পেখমে
লেগে আছে পুণ্যজল, বিভূতির ছবি
বিলুপ্তির সাক্ষ্য হবে খুলি ও পাঁজর 
গ্রহের দখল নেবে অন্য কোনো প্রাণি



মহামারির দিনে

বেদনারা নির্মোহ। অথচ আমিও কিছুটা গৃহকোণে পড়ে থাকা ভোঁতা দা'য়ের মতো লালচে হয়ে থাকব, এমনটা হয় না। দেখি অবেলার দমকা হাওয়া, ফিকে হওয়া অবহেলা সন্ধ্যার জড়তা মুছে রাতের দিকে মুখ রাখে।  ঘুম-পাওয়া শিশুর মতো হাই তোলে সিঁড়িঘরের আলো। 

ক্যাথলিক চার্চের অদূরে— বুড়ো ছাতিমের গন্ধ ছড়ানো দিনগুলো ক্রমশ অদৃশ্য হয়ে আসে। শত্রুর দিকে ভালোবাসার চোখ অপ্রকাশ্য সন্ধির পাতা মেলে ধরে। ভাবি— আমাদের দিনগুলো আগের মতো সরল নেই। মহামারি ধেয়ে আসে। আমাদের বাঁচার আশার মতো ক্ষীণ হয়ে আসে চোখের ইশারা।

3279 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।