প্রশাসক

নারী প্রশাসক। একটি অনলাইন ভিত্তিক নারী জাগরণের প্রয়াস

ইউরোপের আইন হল প্রচণ্ড স্বচ্ছ আইন।

যখনই ইউরোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কিছু লিখতে বসি, তখনই এক শ্রেণীর মানুষ কতগুলো রিপোর্টের স্ক্রিনশট দিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করে ইউরোপ ডমেস্টিক ভায়ালেন্স এবং যৌন হয়রানিতে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশী আগানো । আশ্চর্যের বিষয় হল এরা কোন দিন ঐ রিপোর্টগুলো পড়ে না, এবং জানে না ইউরোপে আসলে ক্রাইম কিভাবে কাউন্ট করা হয় ! তাই আজকে বাধ্য হলাম বিষয়টা ক্লিয়ার করতে।


ইউরোপের আইন হল প্রচণ্ড স্বচ্ছ আইন। এরা প্রত্যেকটা ক্রাইম, এক এক দিন সহ, আলাদা আলাদা কাউন্ট করে । প্রথমে আসি ডমেস্টিক ভায়ালেন্স এর বিষয়ে।

যেমন ধরুন একটা কাপল দুবছর ধরে এক সাথে আছে, তাদের মধ্যে তিশ দিন ঝগড়া হয়েছে এবং এই ত্রিশ দিনে সে তার বয়ফ্রেন্ড কিংবা হাজবেন্ড এর কাছে থেকে ত্রিশ বার আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে। সুতরাং, এখাকার আইন অনুযায়ী এটা একটা ক্রাইম না, এটা মোট ত্রিশটা ক্রাইম । মানে পুলিশ ত্রিশটা ক্রাইমের চার্জ ঐ ছেলেটার উপরে আনবে , অথচ আমাদের দেশ সহ অনেক দেশে এটা আসলে একটা অন্যায় মানে একটা ক্রাইম। আর সৌদির আইন অনুযায়ী এটা কোন অন্যায়-ই না ! !

এবার আসি সেই যৌন হয়রানীর বিষয়ে। ধরুন একটি মেয়ে বাসে যাচ্ছে এবং পাশের লোকটি তাকে কোন অশালীন মন্তব্য করল, এটা ইউরোপে যৌন হয়রানীর ক্রাইম হিসেবে নথিভুক্ত হবে। আবার ধরুন এক মেয়ে তিন বছর চাকরী করেছে সেখানে তার পুরুষ কলিগ তাকে তিন বছরে যতদিন অশালীন মন্তব্য করেছে , কিংবা যৌন হয়রানী করেছে, সেটা ততটা ক্রাইম হিসেবে কাউন্ট হবে, মানে পঞ্চাশ বার করলে সেটা পঞ্চাশটা আলাদা ক্রাইম !

বাংলাদেশে সেটা ভাবা যায় ? এখানে তো মোটামুটি মেরে হাত পা ভেঙে না দিলে , রেপ না করলে সেটা যৌন হয়রানির পর্যায়ে নেয়াই হয় না !
এবার আসি রেপের বিষয়ে । ধরুন এক মেয়ে তার পার্টনার এর সাথে পাঁচ বছর ধরে আছে এবং তার পার্টনার মেয়েটার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেক্স করেছে দুইশত বার, তার মানে রেপ হিসেবে এটা কাউন্ট হবে দুইশত রেপ !

এই হিসাব করলে বাংলাদেশে একটা বিশাল অংশের বিবাহিত মেয়েরা সারা জীবনে কতবার রেপ হয়েছে? কিংবা এখনো হচ্ছে ?

আর যারা সৌদি সহ বিভিন্ন সহি দেশগুলোর উদাহরন টানে, তাদের জন্য কথা হল সৌদিতে স্বামী যা ইচ্ছা তার বৌ এর সাথে করতে পারে সেটা মোটেও ক্রাইম না ! এমনকি আমাদের দেশ থেকে গৃহকর্মী নিয়ে তারা কি করে আমরা সবাই জানি । আর সৌদিতে রেপ হলে ওখানে বিচার হয় উল্টো মেয়েটার!

এমন না যে ইউরোপে নারী নির্যাতন হয় না । অবশ্যই হয় কিন্তু সেটার বিচার হয় দ্রুত , কঠোর আইন আছে তাই আমাদের তুলনায় এখানে নারী নির্যাতনের চিত্রটা ভিন্ন।

এবার বলেন আসলে নারী নির্যাতনে কোন কোন দেশ এগিয়ে আছে ? এর পরেও না বুঝলে, দুঃখিত আপনি এখনো বুদ্ধি ভ্রষ্ট হয়ে আছেন আপনার জন্য শুধুই সবমেদনা ।

1677 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।