মি টু হ্যাশট্যাগ টি আমার এক ছেলে বন্ধু তার স্ট্যাটাস হিসেবে দিয়েছে। শৈশবে যৌননির্যাতনের শিকার যেমন মেয়ে শিশুরা হয়,তেমনি হয় ছেলে শিশুরাও। একজন মেয়ে শিশুর জন্য এই কষ্টটি যেমন বেদনাদায়ক, ঠিক তেমনি বেদনাদায়ক একজন ছেলে শিশুর জন্যও।
শৈশবে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া অপরাধ টি একজন মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য কে কতটা বিপর্যস্ত করতে পারে তার সীমা জানা নেই।
আমি প্রমা ইসরাত কিভাবে একজন বদরাগী, রগচটা, গম্ভীর শিশুতে পরিণত হয়ে গেলাম তা আমি নিজেই জানতে পারি নি। শৈশবের আমি যেমন চঞ্চল মজার মানুষ ছিলাম, সেই প্রমাকে আমি একসময় হারিয়ে ফেলেছিলাম।
শুধু শৈশবে না, নারী জনমে বহুবার রাস্তা ঘাটে চলতে ফিরতে অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শের শিকার হতে হয়েছে। সর্বশেষ শিকার হয়েছি, দুই বছর আগে, পহেলা বৈশাখে ময়মনসিংহে। সবার সাথে দাঁড়িয়ে খুব হাসিঠাট্টায় মশগুল ছিলাম, আনন্দে ছিলাম, ঠিক এই সুযোগে পিছনে হাত দিয়ে দ্রুত ভীড়ে হারিয়ে গেল শুয়োরটা। আমি ঠিক মতো যে ধরবো, সেই সুযোগ ই পেলাম না। এবং আনন্দের সেই মূহুর্ত আমার জন্য নিমেষেই বিষাদে পরিণত হল।
অনেকেই বলার জন্য প্রস্তুতি নিবে যে, "ভীড়ে খেয়াল রাখতে হয়, ভীড় এড়িয়ে চলতে হয়, পোশাক শালীন ছিল কিনা, আমি কি হাসতে হাসতে ঢলাঢলি করছিলাম কিনা, ইত্যাদি"
এইসব কোন কিছু মাথায় এলে মনে রাখবেন ওই শুয়োরের হাত দেয়া কোন পয়েন্টেই জায়েজ হয়ে যায় না। শৈশবের নিজের সাথে ঘটে যাওয়া অপরাধ টি নিয়ে শিশু অবস্থায় নিজের বাবা মার কাছে বলার মতো পরিবেশ থাকা খুব জরুরী, এবং সবচেয়ে জরুরী এই ব্যাপারটিতে শিশুর মনের অবস্থাটা নিয়ে কাজ করা, যেন সে স্বাভাবিক হতে পারে।
মা বাবা কে নিজের মনের কথা বলতে পারা মানুষের জীবনে মুক্তির প্রথম ধাপ।