জান্নাতুন নাঈম প্রীতি

কথা সাহিত্যিক

অভ্যাস করুন, সমতা গড়ুন

আমার হলের এক বান্ধবী সদ্য বয়ফ্রেন্ডের কাছ থেকে পাওয়া একডজন লিপস্টিক দেখিয়ে জানতে চেয়েছে- প্রীতি, তোমার বয়ফ্রেন্ড তোমাকে কি কি দিয়েছে? জবাবে তাকে বললাম- কিছু দেয় নি, আমিই সামান্য কিছু দিয়েছি। শুনেই সে চোখ সরু করে বললো- এই ছেলে আবার ‘ভাঙায়ে খাওয়া’ টাইপ ছেলে না তো? শুনে আমি তাকে একগাল হেসে বলেছিলাম- সেক্ষেত্রে তুমি অনেক আগে থেকেই ‘ভাঙায়ে খাওয়া টাইপ’ মেয়ে! তাই না?

প্রিয় নারীরা, শোনেন! 
বাংলাদেশের কতিপয় নারীর মতো বদমাইশ, হিপোক্রেট এবং সুবিধালোভী আমি আর দুইটি দেখি নি। এরা বাসের সিট, রেস্ট্যুরেন্টের বিল, গিফটের টাকা সবখানে পুরুষের প্রতি হাভাতের মতো হাঁ করে থাকবে। জীবনে একদিন রেস্ট্যুরেন্টের বিলটি, বাসের সংরক্ষিত সিটটি, গিফটের টাকাটি নিজে বের করবে না। একটু পান থেকে চুন খসলেই বলবে- ও আমাকে কেয়ার করে না, অথচ পুরুষের টাকা পয়সার প্রতি কেয়ারলেস রকমের পিপাসা নিয়ে হাঁ করে রইবে। 

কেবল স্বাধীনতা নামক ক্ষমতাটির বেলায় গলার রগ ফুলিয়ে বলবে- স্বাধীনতা চাই!

জী হ্যাঁ, টিপ কপালে দিয়ে গালে পাউডার মাখা স্বামীর টাকার মুখাপেক্ষী নারীবাদীগণ- স্বাধীনতা চাওয়ার জিনিস না যে কেউ চাইলেই পাতে তুলে দেবে। যে মেয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন, তার আলাদা করে স্বাধীনতা চাইতে হবে কেনো? কার কাছে? 

স্বাধীনতা তো তাকেই চাইতে হয় যে কোনো না কোনোভাবে পরাধীন! তাই না?

আমি জানি, আমার দিকে আপনি তেড়ে আসবেন। আপনাকে জানিয়ে রাখি- জীবনে যতোগুলি প্রেম করেছি সেসবের প্রতিটিতে নিজের পার্স আর মানিব্যাগ খুলতে কখনো কার্পণ্য করি নি। টাকাগুলাও নিজের, বাপের টাকা না। যে ভদ্রলোকের সাথে এখন প্রেম করছি তাকেও মানিব্যাগ খুলতে দেই নি।

না, নিজের টাকা দেখাতে এটা করি নি। নিজের তথাকথিত নারীবাদীতা ‘না দেখানো’র জন্য করেছি। করেছি, কারণ পুরুষ জানুক- মেয়েরা আধুনিক হওয়া মানে রূপে গুণে পোশাক আশাকে আধুনিক হওয়া না, মেয়েরা আধুনিক হওয়া মানে পার্স খুলতে জানা, মিথ্যা স্বাধীনতার বড়াই না দেখিয়ে নিজের অর্থ ব্যয় করে স্বাধীন হতে শেখা!

জেনে রাখুন, অর্থই অনর্থের মূল নয়। অনর্থের মূল হচ্ছে- নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে অপাত্রে অহেতুক অর্থ ও স্বাধীনতা দান। আরও জেনে রাখুন- অর্থ এবং স্বাধীনতা দুটিই অর্জনের বিষয়, ‘স্বাধীন’ সেজে থাকা পরাধীনতার মুখরোচক বিজ্ঞাপন নয়! মনে থাকবে?

1645 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।