রুশ বিপ্লব মানব জাতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে প্রথম কমিউনিস্ট তত্ত্বের ভিত্তিতে একটা রাষ্ট্র নির্মাণের ও সমাজ গড়ার চেষ্টা করা হয়। কমিউনিস্ট তত্ত্বের ভিত্তিতে রাষ্ট্র নির্মাণের ও সমাজ গড়া চেষ্টা মানে শ্রমিক শ্রেণীকে ক্ষমতার কেন্দ্রে এনে সাম্যের ভিত্তিতে একটা ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা। যে সাম্যের কথা এখানে বলা হচ্ছে, তা সর্বক্ষেত্রে অর্থাৎ নারী-পুরুষ, শ্রেণী, বর্ণ, নৃতত্ত্ব, জাতি, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সমতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা, যা ছিল রুশ বিপ্লবের ও পরবর্তীতে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের দর্শন। কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা জানতেন, সর্বক্ষেত্রে সাম্য প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপই হতে হবে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য শিক্ষার সমান সুযোগ। ১৯১৭ সালে বিপ্লব সংঘটিত হবার পর এর ৭ম বার্ষিকীতে দেশের সর্বক্ষেত্রে তথা কৃষকদের মধ্যে, শ্রমিকদের মধ্যে, আর্মির মধ্যে শিক্ষার হার অর্জিত হল প্রায় ১০০% যা ইতিহাসে একটি বিষ্ময়কর ঘটনা। পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে, সমাজে, রাষ্ট্রে নারীর জন্য পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছিল বিপ্লবের শুরু থেকেই। এই যে পরিসংখ্যাণে দৃশ্যমান অর্জন, এটা কখনই সম্ভব হয় না যদি না পরিবর্তন ঘটে মানুষের মনোজগতে অর্থাৎ পুরুষ যদি মনে-প্রাণে বৈজ্ঞানিকভাবে নারীকে তার সমকক্ষ হিসেবে বিশ্বাস না করে, তাহলে বহিরাঙ্গে অর্থাৎ পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে, সমাজে, রাষ্ট্রে নারী-পুরুষের মধ্যে সমতা আনা সম্ভব হয় না। এটা সম্ভব একমাত্র বিপ্লবে কারণ বিপ্লব মানে প্রথমে মনঃজাগতিক পরিবর্তন এবং তারপর বাস্তব জগতে তথা কাঠামোতে পরিবর্তন।
রুশ বিপ্লব রাশিয়ার মানুষের জীবনমানে উল্লম্ফন ঘটিয়েছিল, তিন দশকের মধ্যে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে উন্নীত হয়েছিল, শিল্পায়নে, কৃষিতে, বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে, শিল্প-সাহিত্যে, চলচ্চিত্রে এত দ্রুত এত বিশাল উন্নতি কেবল রাষ্ট্রীয় সেন্ট্রাল প্লানিং দ্বারাই তথা কমিউনিস্ট নীতিতেই সম্ভব। কিন্তু এই যে অভাবিত উন্নয়ন- এ উন্নয়ন যতটা বড় হয়ে প্রতীয়মান, আসলে ততোটা বড় ছিল না অর্থাৎ ‘নেট গেইন’ ছিল উন্নয়ন পরিসংখ্যাণের চেয়ে কম কারণ এ উন্নয়ন খরচবিহীন ছিল না। এ উন্নয়ন ঘটেছিল অনেক ভাংচুরের বিনিময়ে। কারো কারো জীবন, বিশেষ ক’রে, অনেক কৃষকেরই জীবন তছনছ ক’রে দিয়েছিল এ বিপ্লব।
রুশ বিপ্লব কি সফল না ব্যর্থ? এ প্রশ্নের সোজা-সাপটা জবাব দেয়া কঠিন এবং একটা বিতর্কের বিষয়। কিন্তু আমার পর্যবেক্ষণ হল, ব্যর্থ হয় নি রুশ বিপ্লব। সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতীয় সংগ্রাম, যুদ্ধ ও বিজয় এই রুশ বিপ্লবের কারণেই হয়েছে। অসংখ্য শ্রমজীবি মানুষের মুক্তি ঘটেছে রুশ বিপ্লবের কারণেই। আমার নিজের দেশের স্বাধীনতার জন্যও আমার ঋণ রুশ বিপ্লবের কাছেই। সারা পৃথিবীতে, এমনকি উগ্র পূঁজিবাদী দেশেও শ্রমিকের মর্যাদা ও ন্যায্য পাওনা সম্ভব হয়েছে এই রুশ বিপ্লবের কারণেই। এই রুশ বিপ্লব পৃথিবীকে শিখিয়েছেন যে, নারী পুরুষ সমান। এই রুশ বিপ্লব পুরুষকে শিখিয়েছে কীভাবে নারীকে শ্রদ্ধা করতে হয়। এই রুশ বিপ্লব সারা পৃথিবীতে নারীবাদের জাগরণ তুলেছে। কল্যাণ রাষ্ট্রের যে ধারণার আবির্ভাব ঘটল গত শতকের মাঝামাঝি, পৃথিবীর দেশে দেশে যে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আয়োজন হল, তাতো রুশ বিপ্লবেরই ফল। পূজিবাদী বিশ্বেও এই যে ধণাত্বক পরিবর্তন, এ পরিবর্তন গ্রহণ করার অর্থ হল ছাড় দেয়া যাতে কমিউনিস্ট বিপ্লব দানা না বাঁধে, যাতে পূঁজিপতিদেরকে সব হারাতে না হয়।
রাশিয়াতে আমার কর্মসূত্রে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞানে আমি যা দেখি, যা মনে হয়- তা হল, এই রুশ বিপ্লব সবচে ব্যর্থ আজকের রুশ সমাজেই। এই সমাজের মধ্যকার ব্যক্তিতান্ত্রিকতার মতো এত প্রকট ব্যক্তিতান্ত্রিকতা পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে বলে আমার জানা নেই। পারষ্পারিক অবিশ্বাস, যৌথ উদ্যোগের অভাব, দূর্নীতি, দেশের গণতন্ত্রহীনতা, ক্ষমতাসীন দলের স্বৈরতান্ত্রিকতা এবং এর বিরূদ্ধে সোচ্চার হবার আকাঙাখার অভাব রুশ বিপ্লবের ব্যর্থতার কথাই আমাকে জানান দেয়।
আজকের রাশিয়াকে দেখলাম স্বার্থপর পুরুষের অবয়বে ভরা। রাশিয়াতে এত উঁচু ডিভোর্স রেইটের প্রধান কারণ পুরুষেরা প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছে অপেক্ষাকৃত অল্প বয়সের অন্য একটা মেয়েকে গ্রহণ ক’রে স্ত্রীকে বিদায় ক’রে দেয় এবং সন্তানদের ভার স্ত্রীর কাঁধে দিয়ে নতুন স্ত্রীকে নিয়ে সে চলে যায় অন্য কোথাও। সন্তান মানুষ করার জন্য রুশ নারীরা যুগ যুগ ধরে সীমাহীন ত্যাগ ক’রে আসছে। অক্টোবর বিপ্লবের পর গৃহযুদ্ধে প্রচুর লোক মারা যায়, যাদের অধিকাংশই পুরুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মৃতের সংখ্যা বলা হয়ে থাকে ২০ মিলিয়ন যার অধিকাংশই পুরুষ, যদিও যুদ্ধে সরাসরি অংশ নেয় ৮ লাখ মহিলা। এ ছাড়া পুরুষেরা যাতে যুদ্ধ করতে পারে সেজন্যে মহিলারা প্রচুর কাজ করে ফ্রন্টে সাপ্লাইয়ে যেন বিঘ্ন না হয়। এ ছাড়া যুদ্ধের পর দেশ গড়ার মুল দায়িত্ব পড়ে এদেশের মেয়েদের হাতে। সোভিয়েত আমলে তো বটেই, এমন কি আজকের রাশিয়াতেও স্কুলের শিক্ষক, দোকানের বিক্রেতা, ক্লিনিকের ডাক্তার, ব্যাঙ্কের কর্মচারী থেকে শুরু করে শত শত সেক্টরে মেয়েরা কাজ করে আর এসব সেক্টরে মেয়েরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। শুধু তাই নয়, এদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী আর ক্রীড়া জগতেও মেয়েদের সরব উপস্থিতি। রেডিও, টিভি, শো বিজ, সিনেমা, থিয়েটার সর্বত্র নারীর প্রাধান্য। যখন দেখি, প্রতিটি গৃহস্থলীর সব কাজ, সন্তান দেখাশুনা, স্কুলে নেয়া, পড়ানো- এমনকি স্বামীর খাবারের প্লেট, তাঁর কাপড়-চোপড় পর্যন্ত স্ত্রীকে ধুয়ে দিতে হয়, তখন বিপ্লবের কোন ফল আমি রাশিয়ার সমাজে দেখতে পাই না।
রাশিয়ার মেয়েদের আত্মমর্যাদাবোধ, নৈতিকতা ও পরিশ্রম ক'রে নিজের পায়ে নিজে দাঁড়ানোর স্পৃহা আমাকে ভীষনভাবে মুগ্ধ করেছে কিন্তু এ বৈশিষ্ট্যগুলো যে রুশ বিপ্লবের সুফল- এ কথা কী করে বলি? বিপ্লব হয় নি এমন কোন পুঁজিবাদী সমাজের মেয়েরাও এ রকম হতে পারে। তবে রাশিয়াতে এ যুগেও ম্যাক্সিম গোর্কির মা'র দেখাও পেয়েছি- শুধু একজন নয় অনেক জন। পেয়েছি আনা কারেনিনাকে, ক্রুপস্কয়াকেও অনেক মেয়ের মধ্যে যাঁরা ভালবেসেছে নিঃস্বার্থে, চোখের জলে বিদায় দিয়েছে, জীবনপাত্র কানায় কানায় ভরে দিয়েছে কোন ভিন দেশী কবির জীবন। ২০১৬-এর জুলাইতে সাইবেরিয়ান ফেডারেল ইউনিভার্সিটির নিমন্ত্রণে তাঁদের সামার স্কুলে পড়াতে গিয়েছিলাম ভিজিটিং লেকচারার হিসেবে। সামার স্কুলটি ওরা আয়োজন করেছিল ওদের সামার ক্যাম্পাসে, প্রিমর্স্ক গ্রামের উবে নদীর পাড়ে। সামার স্কুলের শেষ দিন সমাপ্তি উজ্জাপন করছিল ছাত্ররা নেচে গেয়ে সন্ধায় সবুজে ঘেরা নীল আকাশের নিচে এক মনোরম পরিবেশে। নদীর পাড়ের মাঠে দাঁড়িয়ে তাই দেখছিলাম। হঠাৎ একটা মেয়ে দৌঁড়ে এসে আমার হাতে একটা কাগজ দিয়ে বলল:
-"প্রফেসর, এই নাও তোমার জন্য একটা ছোট্ট উপহার।"
-“এটা কী, ক্রিস্টিনা?”
-“আমার ভালবাসা। তোমাকে দিলাম। তুমি না বলেছিলে দেশকে ভালবাসতে?”
কাগজটা হাতে নিয়ে দেখি, এতে রাশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত লেখা আর নিচে মেয়েটির নাম, আর লেখা 'অনেক শুভেচ্ছা।‘ সেদিনের সেই সোনা-ঝরা সন্ধায় আমার চোখ শ্রাবণের ধারায় ভেসে গিয়েছিল। ক্রিস্টিনাও অনেক কেঁদেছিল। অনেক মমতায় বুকে টেনে নিয়েছিলাম ক্রিস্টিনাকে আর টের পেয়েছিলাম কান্নার তোড়ে তাঁর পৃষ্ঠদেশের ওঠা-নামা। তার আগের দিন নদীপথে স্টীমারে যেতে যেতে আমার এক প্রশ্নের জবাবে ক্রিস্টিনা বলেছিল, 'আনা কারেনিনা বা ক্রাইম এণ্ড পানিশমেন্ট- এ সব গল্প যত বার পড়ি, আমার ভীষন কান্না পায়, আমার কিচ্ছু ভাল্লাগে না।'
রাশিয়াতে গিয়ে দেখা পেয়েছিলাম, নিকোলাই অস্ত্রভোস্কীরও। সামার স্কুল শেষে ঐ একই ইউনিভার্সিটি আমাকে নিয়োগ দেয় পূর্ণ প্রফেসর হিসেবে স্থায়ী পদে। ইউনিভার্সিটিতে আমার এপার্ট্মেন্টে আমাকে যিনি দেখাশুনা করেন তাঁর নাম সেরগেই- বয়স ষাটের মতো হবে। তাঁর কাজ ছিল আমার ঘরের কোন কিছু নষ্ট হলে বা ভেঙে গেলে তা ঠিক করা, নতুন কিছু লাগলে তা এনে দেয়া, আমার আর কিছু লাগবে কিনা তা মাঝে মাঝে এসে জিজ্ঞেস করা। কিন্তু নির্দিষ্ট করা তাঁর এ সব দায়িত্বের চেয়েও অনেক বেশি করেন তিনি আমার জন্য; যেমন, আমার গাছে জল দেয়া, ঘর সাজাতে সাহায্য করা, বাজার থেকে ফিরে এলে ব্যাগগুলো উপরে নিয়ে আসা ইত্যাদি। তিনি প্রায়ই কারণে অকারণে আমার ঘরে বেল দিয়ে চমৎকার একটা হাসি দিয়ে অভিবাদন করেন আর আমাকে জিজ্ঞেস করেন, 'কেমন আছো, প্রফেসর? সব ঠিক আছে? কোন সমস্যা নেই তো? কিছু লাগবে নাকি?' আমি বুঝি তিনি এ সব করেন আমার প্রতি এক গভীর ভালবাসা থেকে, এক ভিন দেশির প্রতি সহমর্মিতা থেকে। কিন্তু আমি খোঁজ নিয়ে দেখেছি, তিনি এত কিছু সব ভিন দেশির জন্য করেন না। আমি বোঝার চেষ্টা করেছি তিনি আমাকে কেন এত কদর করেন। যতবারই তাঁর সাথে দেখা হয় আমি হাত বাড়িয়ে দিই হ্যাণ্ডশেক করার জন্য- আবার দু'হাত খালি থাকলে বাঙালি-ভারতীয় কায়দায় পূর্ণাঙ্গ নমষ্কার দিই। জোর ক'রে কখনও ঘরে নিয়ে আসি। যখনই তিনি আসেন, আমি তাঁকে কফি খেতে বলি কিন্তু লাজুক প্রকৃতির সেরগেইকে আজও কফি খাওয়াতে পারি নি। শুধু একদিন জোর ক'রে নতুন বছরের শুরুতে এক ব্যাগ চকলেট দিতে পেরেছিলাম। তিনি আমাকে অবাক ক'রে দিয়ে একদিন সকালে আমার ঘরে এসে উপস্থিত হাতে দু'টি কাঁচের পাত্র নিয়ে। ভেতরে এসে ব্যাগ থেকে ওগুলো বের ক'রে বুঝিয়ে বললেন, 'এগুলো ঘরে তৈরি। এটা আমাদের বাগানের ফলের তৈরি জ্যাম। আর এটা পাঁচমিশালি ফল দিয়ে তৈরি ঘন রস। তুমি এগুলো প্রতিদিন সকালে খাবে। বুঝেছ? বাজারের জিনিস তুমি খাবে না। ঠিক আছে? এতে তোমার ঠিক এক মাস চলে যাবে। এক মাস পর আবার দিব। এখন আমি যাই। অনেক কাজ। পরে দেখা হবে।' আমি তড়িঘড়ি কফি বানাতে যাই। কিন্তু সেরগেই থাকেন না। তিনি চলে যান আর রেখে যান আমার জন্য বেদনা-মিশ্রিত ভালবাসা আর চোখের জল। আমার মনে পড়ে বাবার কথা, মা'র কথা। ভেবে কুল পাই না এত ভালবাসা সেরগেই কোথায় পেয়েছে ! আমার আগের জ্যাম দু'এক দিনের মধ্যেই শেষ হবে- এমনই অবস্থা। সেরগেই ঠিক আজকে এসে হাজির আবার এক বিশাল কাঁচের পাত্র ভর্তি ঘরে বানানো জ্যাম নিয়ে। তাঁর সামনেই (তাঁকে খুশী করার জন্য) খুলে ঘন কালচে-লাল জ্যাম এক চামচ মুখে দিয়ে বললাম, 'ওয়াও দারুন হয়েছে ! আমি এখনও নাশতা করি নি। আমি এটা দিয়েই এখনই নাশতা করব। তুমি বসো। এক্ষুনি নাশতা রেডি করছি। দু'জনে একসাথে খাব।‘ কিন্তু সেরগেই আমার কথায় কর্ণপাত না ক'রে বলে, 'না না না আমার সময় নেই। তুমি খাও। এটা তোমার জন্য। সাইবেরিয়ার ঠাণ্ডায় তোমার শরীর ঠিক রাখা দরকার। দাস-ভিদানিয়া (মানে বিদায় !)।' কি সহজেই সেরগেই আমাকে বিদায় জানিয়ে চলে যেতে পেরেছিল কিন্তু আমি তো এ বিদায় গ্রহণ করেতে পারি নি এত সহজে। সারাদিন তাঁর এই ভালবাসার কথা মাথার মধ্যে ঘুর-পাক খেয়েছে--- বার বার মনে হয়েছে কীভাবে শ্রদ্ধা দেখাতে পারি তাঁর এই ভালবাসার প্রতি। তাই এ লেখাটির মধ্যে তাঁর গল্পের অবতারনা। আমি জানি, সেরগেই এ লেখার কথা কোনদিন জানবে না- জানবে না আমিও তাঁকে ভালবাসি ঠিক পিতার মতো। এই নিঃস্বার্থ মানুষটি কীভাবে আমাকে পুত্র স্নেহে আগ্লে রেখেছিলেন আর বিদায়ের দিনে এই বৃদ্ধ বয়সেও কি শিশুর মতো কেঁদেছিলেন, তা মনে পড়লে আজও আমি আনমনা হয়ে যাই।