যৌন নিপীড়ন নিয়ে, ধর্ষণ নিয়ে প্রতিবাদ প্রতিহতের কথা বললেই আমার অফলাইন অনলাইন সবখানের বেশিরভাগ বন্ধু ও পরিচিতজনেরা মুখ লুকিয়ে ফেলে। তাদের কারণগুলোও অদ্ভুত। আপনাদের জন্য আমার করুণা হয়, মায়াও হয়, আপনাদেরকে নিয়ে লজ্জাও হয়, আমার মনের কথা আমি বলে যাই, আমি জানি এতে করে ৫ জন হলেও মানুষ উপকৃত হয়, অনুপ্রাণীত হয়, অনেক মানুষ আমাদের নৈতিক সমর্থনে অফলাইন অনলাইনে দাঁড়ায়, কাঁধে কাঁধ মিলায়, আমার লেখা এবং অনুভূতি শুধুই তাদের জন্য!
একজন পুরুষ তো জানেই না যে একজন নারীকে কি কি মানসিক ও সামাজিক নিপীড়নের শিকার হতে হয়, কতটা আতঙ্কের ভেতর থাকতে হয়, কতটা সচেতনতা নিয়ে চলতে হয়। মুহূর্তের জন্য ও নারীর বেখেয়াল হওয়ার উপায় নাই।
একজন নারী ঘরেও অনেকাংশে এবং কখনো কখনো পুরো মাত্রায় মানসিক শারীরিক পারিবারিক নির্যাতন নিপীড়নের ভেতর থাকে এবং যেকোনো নারী রাস্তায় নামা মাত্র তার মানসিক চাপ বাড়তে থাকে...! একজন নারী কখনো কোনো পুরুষকে টীজ করে না, নোংড়া কথা বলে না, পুরুষের দিকে নোংড়াভাবে তাকায় না, পুরুষের শরীর হাতায় না, চোখ চালায় না, পুরুষের পাছায় বুকে হাত দেয় না, বাজে ইঙ্গিত দেয় না কিন্তু নারী ঘর থেকে বের হওয়া মাত্র এইসবের শিকার হতে থাকে!
একজন পুরুষ তো কখনোই নারীর এই মানসিক- সামাজিক চাপ, কষ্ট- অপমান নারীর মতো করে বুঝার সাধ্য রাখে না। মানুষ পুরুষগুলো শুধু অনুমান করার চেষ্টা করে, নারী তা শিশু হোক কিংবা বৃদ্ধ - সকল প্রকার নারীর শরীর মাপে পুরুষ, চোখ মন ও জিহ্বা দিয়ে ধর্ষণ চালায় অবিরত আর সুযোগ পেলে তো অবশ্যই অণ্ডকোষ দিয়েই তারা ধর্ষণ করে।
নারীর আচরন কিংবা পোশাক কোনোকিছুই ধর্ষণের কারণ না বরং পুরুষের মনোবিকৃতি এবং পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্যবাদ ধর্ষণের কারণ। সকলের হাতে মোবাইল, স্মার্ট ফোন - তাতে মোবাইল ডাটা এবং অপারেটরদের দেয়া ফ্রী ডাটার লোভনীয় অফার- পর্ণগ্রাফির ছড়াছড়ি- পুরুষের মাথায় মাল তো সারাক্ষণই চড়ে থাকে। যুগ যুগ ধরে মদ আর মাগী হইলো পুরুষের অন্যতম এন্টারটেইনমেন্ট। নারীর যোনী ছাড়া পুরুষের চলে না আর সেই নারীকেই গাইল দেয় মাগী বলে - হাস্যকর লাগে, আমার জিদ উঠার থেকে বেশী যে পুরুষগুলো এসব মনোবিকৃতি এবং হারামীপনার ধারক বাহক লালনকর্তা তারাই কিন্তু আসলে মাগী এবং খানকী, অথচ তারা নিজেরাই নারীকে নিজেদের অর্জিত বিশেষণে বিশেষিত করে।
নারী যখন নারী কে এসব ভাষায় কথা বলে তখন আমি অবাক হয়ে যেতাম কিন্তু এখন আর অবাক হই না কারণ জানি তো নারীর দাসত্বের জায়গাগুলোকে...।
নারীই তো পারে নি নারীর সমব্যাথী সহচর হতে, পুরুষ কিভাবে পারবে? পুরুষ তো যৌনতায় সবথেকে নিরাপদ কমফোর্ট জোনে থাকে, তারা কতটা পারে এই আতংক কষ্ট অপমান কে উপলব্ধি করতে? মানুষগুলো পারে, চেষ্টা করে অন্তত, আর কেউ কিছুই পারে না, পারতে চায়নি কখনো! যাই হোক, বাইরে যখন বের হই তখন আশেপাশের পুরুষের নজরগুলোকে মাপতে থাকি, পুত্রসম ছেলেরাও খিস্তি করে, শরীরে চোখ বুলায়, আমি ওদের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি, খেয়াল করলেই গাইল দেই এবং শেষে মেরে বসি নির্দ্বিধায়, না মেরে কোন উপায় থাকে না আসলে। আমি তো মানুষের কাছে সাহায্য ও আশা করি না কারণ এখন জেনে গেছি মানুষ কতটা শঠ, তাদের মন কতটা বিবশ এবং তারা কতটা নির্বোধ নির্লিপ্ত স্বার্থপর... ইদানীং খুব মনে হচ্ছে একটা কথাই যে মাইর ছাড়া আর কোন গতি নাই।
#StopRape
#StopViolenceAgainstHuman