সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে বিচার ঠেকায়ে রাখা কঠিন হয়। অ্যাট লিস্ট গ্রেফতার করতে হয়। এসব ঠেকাতে থানার ওসিরা আজকাল নতুন কিছু কৌশল বের করছে যাতে প্রথমেই এই নষ্ট সমাজের মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরায় দেয়া যায়। এজন্য সবচেয়ে ভালো উপায় নারীর চরিত্র সম্পর্কিত বিষয় সামনে আনা। কোনো এক বিখ্যাত হারামজাদা কোনো এক খুনের তদন্ত করতে গিয়া বলছিলো না, 'পিছনের মহিলাটি কোথায়?'
এই হইলো সেই বিখ্যাত ট্রেন্ড যা বাঙালি খুব ভালো জানে। ফলে খুনীদের জন্য তাবৎ সমাজের সহানুভূতি আদায় করাটা এখন প্রথম কাজ। সেই উদ্দেশ্যে বরগুনা থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন প্রথমেই ছড়ায় দিসে নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশার সাথে খুনী নয়নের সম্পর্ক ছিল। ওসি আবীর এই সমাজ সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো জ্ঞান রাখে। ফলে বাতাস কোনদিকে যাইবো, সেইটা তিনি ঠিক জানতেন।
সাথে সাথে বাঙলার আপামর পুরুষ সমাজের ডান্ডা খাড়া হয়া গ্যাসে। তারা মেয়ের ও মেয়েদের চরিত্র নিয়া নানা স্ট্যাটাস প্রসব করতেসে।
নারীর প্রতারণা ও প্রেমের বদলায় খুন- এই কথা তো তাদের শিখায়ে দিয়া গেছেন শাহরুখ খান, জসিম, মান্না ইত্যাদিরা। ফলে তারা এই খুনের যাবতীয় দায় দেবার মতো একটি নারী চরিত্র পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়তেসে।
যে দেশে খুনের পাশে পুলিশ দাঁড়ায়ে থাইকা নাক খুঁটে আর আকাশ দ্যাখে, যে দেশে বিচারের জন্য মানববন্ধনে দাঁড়াইতে হয়, যে দেশে বিচার চাইলে হুমকি দেয়া হয়, যে দেশে আদতে কোনো ঘটনারই বিচার হয় না, সেই দেশে পাবলিক এইসব নিয়াই সন্তষ্ট থাকবে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নাই। উন্নত চিকিৎসা না পাইলে লোকে ঝাড় ফুক করে, কবিরাজ দেখায় আর তা না পাইলে কালা আছরের সন্ধান করে। যে কালা আছর কোনো এক ডাইনীর অভিশাপে হইসে। এখন সবাই মিলে সেই ডাইনীরে জীবন্ত পুড়াইলেই বিচার সমাপ্ত হবে।
আসেন ডাইনী বধ করি। বাস্টার্ডস!