আলহাজ্ব মুফতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ

অনলাইন একটিভিস্ট।

মালাউনের মেয়ে

পেয়েছ কি মহাসুখ?

বন্ধুকে বলেছ কি - করেছ তুমি রেপ,

কি মজাটাই পেয়েছো বুঝি - কি অপূর্ব খেপ!

 

পটিয়েছিলে বেশ কিছুদিন, হয় নি তাতে কাজ,

অবশেষে করেই ফেললে.... ছুঁড়ে দিয়ে লাজ!

 

চিৎকার করে কেঁদেছিলো সে, গামছাবাঁধা  দিলে,

কি সুবিধাটাই হলো তোমার, একাই সুখ নিলে!

 

কতবড় বীর যে তুমি, বন্ধু বলেছে নাকি,

বন্ধুকে বলেছো - আরো নাকি, তিনটে খেপ বাকি!

 

সাবাশ বেটা, পুরুষ তুমি, কি অপূর্ব বল,

রেপের সময় আটকাতে পার, আর্তনাদের গল!

 

এর আগেও শিউলি রাণীকে পেয়েছো পাটেরক্ষেতে,

হয়েছে দেখা, বীরেন স্যারের কোচিংয়েতে যেতে।

 

শিউলির নাকি বক্ষটা বেশ, মালাউনের সে মেয়ে,

ওড়না নাকি ছিলো খাটো, দেখেছো তুমি চেয়ে। 

 

অনুভূতিতে চোট লেগেছে, হাজীরবেটা তুমি,

'টসটসে মাল' (?) দেখে নাকি ধরেছ তাকে চুমি!

 

এতে নাকি উত্তেজনা উঠেছে চরমে,

যা করার তা করেই ফেললে তীব্র গরমে।

 

পড়ালেখা বন্ধ হলো, গৃহে পড়ে রয়,

শিউলির মা দুখের কথা কাউরে নাহি কয়।

 

কেনু মেম্বারকে বলতে গিয়ে ধমক সইতে হয়,

মেয়ে তোমার খাটো ওড়না পরতো, তাইতো লোকে কয়।

 

বীরবাহাদুর খানের বেটা, মুমিন যথার্থ,

বাপে তার হজ্ব করেছে, একুশবারের মতো!

 

নিজ বাড়িতে মসজিদ আছে, মক্তবও সাথে,

কোরবানিতে মাংস বিলায়, পাকপবিত্র হাতে।

 

নেতানেত্রী বেড়াতে এলে হাজীরবাড়ি ওঠে,

আপ্যায়নের রমরমাতে প্রশংসা-খই ফোটে।

 

হাজীসাহেব বড়ই উদার, দিলদরিয়া খুব,

লক্ষ্মীর স্বামীকে মাঘের শীতে দিয়েছিলেন চুব।

 

অমল নাকি বলেছে লোকেরে - ঋণের কথা বলে - 

লক্ষ্মীকে রেপ করেছে হাজী, 

ওষুধ দিয়ে ফলে।

 

"কবা না কাউরে, তাইলে কিন্তু খবর আছে পুরা,

খোদার বান্দারা খেইপ্যা যাইবো, করবো ঝুরাঝুরা!"

 

- খেপেছে সমাজ, খেপেছে নামাজ, খেপেছে হুজুর সাব,

হাজীর মতো নিষ্পাপেরে এমন অপবাদ!

 

খোদার আরশ কাঁপছে নাকি অপবাদের চোটে,

আগামী বছর হাজী সাহেব দাঁড়াবেন আবার ভোটে। 

 

পানিরদরে জায়গাজমি অমল দিলো বেচে,

ভারতযাত্রা করতে হলো সর্বস্ব সেচে।

 

শিউলির মা বুঝেছে সবি, লক্ষ্মীর কথা ভাবে....

কেনু মেম্বার বলেছে তাকে - বলবে হাজীসাবে। 

 

হাজীর ছেলের নামে তুমি এহেন অপবাদ,

কিভাবে দিলে, খোদা এতে করছেন আর্তনাদ!

 

ক্ষমা করবেন মেম্বার সাব, কমুনা আর কাউরে,

কেনুর জিভে জল এসেছে, রঙবাণী যায় আউড়ে!

 

বউ পিটিয়ে বাপেরবাড়ি পাঠিয়েছে কেনু ভাই,

এমন একটা সুযোগ নাকি হাতছাড়া করতে নাই!

 

"কাল দুপুরে আমার বাড়ি আসবা তুমি একা,"

নইলে কিন্তু হাজীর সাথে করমু আমি দেখা!

 

দুপুরবেলা বিউটি রাণী কেনুর বাড়ি যায়,

জানে সবি, পুরুষলোকের স্বভাব কেমন হয়! 

 

তবুও ধরা, কপালফাঁড়া বিউটি রাণী ভাবে,

দেখি না বুঝিয়ে নরম করা যায়, কেনু মেম্বার সাবে। 

 

কেনু মেম্বার গল্প করে, বৌদি আমার- দাদা মরলো সেই কবে,

কিভাবে তুমি একা থাক, যৌবনের এই ভবে?

 

জবরদস্তি, জাপটে ধরেও; জিত হলো না তার,

হাজীর ঘরে নালিশ করে, মুখটি করে ভার।

 

সালিশ বসে বিচার বসে, শিউলির মা খারাপ, 

বিমল ঘোষের ছেলের সাথে, রাতে করে ভাব।

 

খোদায়ী দ্বীনের বিরুদ্ধে এটা ষড়যন্ত্র কঠিন,

মালাউনেরা করছে এসব ঠেকাতে খোদার দ্বীন। 

 

দোররা চলে মায়ের পিঠে, হুজুর চিবোয় পান,

হাজী সাহেব খোদার নামে, গাহেন গুণগান।

 

একটি ঢিলে দুটি পাখি, মারা যাবে বেশ,

বিমল যাবে, বিউটি যাবে, মালাউন হচ্ছে শেষ! 

 

পাকপবিত্র হচ্ছে গ্রাম, মালাউন যায় চলে,

লোকেরা সবাই হাজীসাবের কীর্তির কথা বলে।

 

হাজীর এবার লোভ জেগেছে, শিউলিরে লাগে ভালো,

বয়সে যদিও নাতির সমান, কি-ইবা তাতে হলো?

 

শিউলির মাকে ডেকে পাঠায়, কলেমা পড়াও মেয়েকে,

তোমার মাইয়া করুম শাদি, যাওয়া যাবে না বেঁকে!

 

অমত করে বিউটি রাণী, পায়ে পড়ে তার,

হাজীসাহেব রাগ করেছেন, মুখ করেছেন ভার।

 

হাজীর বউয়ের শরীর খারাপ, সয়েছে অনেক ঘাত,

লোকে বলে মারের চোটে, ভেঙেছে নাকি হাত! 

 

কি আর করা - ভারত পালাও, এদেশ তোমার নয়,

খোদার হুকুম অগ্রাহ্য করতে, পাও না তুমি ভয়? 

 

2065 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।