সকালটা ব্যাস্ততার। নবনির স্কুল, পার্থ কে অফিস পাঠিয়ে একটু ঘুম তারপর বুয়ার আসার অপেক্ষা। এটা অহনার ডেইলি রুটিন শুধু নয় অহনার যাদের সাথে নতুন বন্ধুত্ব হয়েছে তাদের অনেকেরই লাইফটা এরকমই।
বুয়া এলেন তার বাঁ চোখের পাশে কালো হয়ে ফুলে আছে। অহনা জিজ্ঞেস করলো বুয়া তোমার চোখে কি হয়েছে? বুয়ার নির্বিকার উত্তর পোলার বাপে মারছে আপা। কেনো মেরেছে একথা জিজ্ঞেস করতেই বুয়ার বলা শুরু হলো আপা আমার ৪ টা পোলাপান পোলার বাপে আরও একটা মাইয়ারে বিয়া করতে চায়, সেই মাইয়ারে কাল বাড়িত আইন্যা পাশের ঘরে রাখছে আমার ৪ পোলাই কাম করে মাশাল্লাহ, হেরা কেউ বাড়িত আসিলো না আমি পোলার বাপেরে কইলাম
-তুমি বিয়া করবা ক্যান? হের বাপে কয় আমার ইচ্ছা তুই কওনের কেডা? বইলা আমারে খুব মারছে লাথ্থি দিসে।
অহনা বললো
-তুমি তোমার ছেলেদের বলো নাই একথা?
বুয়ার তাৎক্ষনিক উত্তর
-ছিঃ ছিঃ আপা এইটা কি কন ছেলের কাছে এইসব কওন যায় এইডা তো আমারই লজ্জা পোলার বাপে আমারে পিডায়। আমি কাউরে কই নাই আপা, আপনে বুঝদার মানুষ হেলাইগ্যা আপনেরে কইলাম।
অহনা আইসব্যাগটা নামিয়ে ওয়াশরুমের আয়নাটাতে নিজের মুখটা দেখে ব্যাথাটা একটু কমেছে চোখটা খোলা যাচ্ছে না হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে কালো দাগটা যেতে।
বুয়াকে কাজগুলো বুঝিয়ে দিতে হবে অহনা বেরিয়ে আসে।
-হায় আপা আপনের চোখে কি হইছে?
অহনা নির্বিকার উত্তর দেয় কিছু না বুয়া রাতে পড়ে যেয়ে খাটের কোনা দিয়ে খুব লেগেছে।
তিথি যেদিন কিলটা খেয়েছিলো ঘুষিটাও মেরেছিলো। কিন্তু সম্পর্কটা শেষমেশ টেকে নি।
গল্পগুলো এত্তো চেনা এত্তো কমন যে বলার কিচ্ছু নেই। সত্যিই তো এতে বলার কি আছে? স্বামী হচ্ছেন পরম সন্মানিত ব্যক্তি তিনি সন্তানের বাবা তিনি আর্নিং মেম্বার অফ আ ফ্যামিলি তিনি সারাদিন পরিশ্রমের পর একটু আধটু রাগ দেখাতেই পারেন, একটু আধটু চড় থাপ্পর মারতেই পারেন, এক বৌ এর সাথে দীর্ঘিন সহবাস করতে করতে বোর হয়ে গেলে অন্য মেয়ে মানুষের কাছে যেতেই পারেন এতে বলার কি আছে? আর এসব বাইরের মানুষকে বলতে গেলে তো একটা মেয়েরই লজ্জা কারণ মেয়েটা তার স্বামিকে যথাযোগ্য যত্ন করতে পারে নি, মেয়েটা তার স্বামীকে ঘরে বেঁধে রাখতে পারে নি, স্বামী যেভাবে চায় নিশ্চয়ই
মেয়েটা নিজেকে সেভাবে তৈরি করে নি।
দারুণ দারুণ সব যুক্তি আমরা মেয়েরাই আগ বাড়িয়ে দেখাই।
আমরা বুয়া কিংবা অহনাকে আমাদের নারীত্বের আইডল মনে করি কিন্তু তিথি আমাদের কাছে মোস্ট আন ই'ফিশিয়েন্ট ক্যারেক্টার।