দু’জন তরুণ-তরুণী কিংবা যবুক-যুবতীগণ একসাথে থাকতে যদি তারা নিজেরা স্বস্তি ও সুস্থবোধ করে তাহলে এই রাষ্ট্র, এই সমাজ ব্যবস্থা কেনো অসুস্থবোধ করে? বিয়েহীন দু’জন তরুণ-তরুণীকে থাকতে দেখলে কেনো এই প্রশাসনের কর্মীদের চক্ষু চুলকায়? প্রশাসন কেনো চায় দু’জন তরুণ-তরুণী একসাথে থাকতে হলে তাদের বিয়ে নামক একটা সার্টিফিকেট থাকা লাগবে? কিংবা পর্যটক এলাকায় ঘুরতে গেলে কেনো কাবিননামার ফটোকপি তাদের সঙ্গে রাখতে হবে? তারা কি রাষ্ট্রের বা প্রশাসনের বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছে? নাকি এই রাষ্ট্র ও সমাজকে উপরে তুলে দিয়ে গাছ থেকে মই সরিয়ে নিয়েছে? ঠিক কোন অধিকারে রাষ্ট্র দুজন যুবক-যুবতীর ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে নাক গলায়? এটাকে ঠিক কোন দিক দিয়ে বলি সভ্য রাষ্ট্রের নীতি?
পরিবারের ইচ্ছের বলি হয়ে দু’জন মানব-মানবী বিয়ে নামক একটি আবব্ধ শৃংখলের বন্ধনে থেকেও দাম্পত্য জীবন যে সুখের হয় না এই খবর কি আমাদের রাষ্ট্র রাখে? সমাজ স্বীকৃত বিয়ে নামক সার্টিফিকেটের আড়ালে প্রতিরাতে স্ত্রী'টি যে স্বামী দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় সেই খোঁজ কি আমাদের রাষ্ট্র নেয়? কিংবা সেটাকে আমাদের রাষ্ট্র অপরাধের সংজ্ঞায় বিবেচনা করে? না করে না।
দিন দিন দেশটা ইসলামীয় মধ্য যুগীয় বর্বর নীতির খোলসে ঢুকে যাচ্ছে। এখন ৯০% ধর্মান্ধ মুসলমানের সমর্থনের নেশায় আমাদের রাষ্ট্রচালক কর্তৃক ট্যুরিস্ট প্রশাসন কক্সবাজার পর্যটক নগরীকেও কলুষিত করতে চাইছে। পর্যটনে তরুণ-তরুণীরা ধর্মের জিকির করতে আসে? একটা পর্যটন নগরী মানে আমোদ-প্রমোদের জায়গা।
পর্যটন নগরীতে তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীরা আসে তাদের ব্যক্তিগত দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততাকে কিছু সময়ের জন্য একপাশে সরিয়ে রেখে একটু সময় কাটাতে। বহুদিনের প্রতীক্ষিত সময়ের অপেক্ষা শেষ করে আসে প্রিয়জনের হাত ধরে একটু রোমাঞ্চিত হতে। আসে একটি রোমাঞ্চময় রাত্রি যাপনের আশায়। দু’জন দু’জনের হাত ধরবে, চুমু দেবে, যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হবে.... এতে অপরাধটা কোথায় তাদের? কেনো এই রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা তাদের ব্যক্তিগত বেড রুমে ঢুকে জানতে চাইবে তারা বিবাহিত কিনা? তাদের সম্পর্ক বৈধ বা অবৈধ কিনা? এটা কি একটা রাষ্ট্র ও সমাজের অসভ্যতা প্রকাশ পায় না? এটা কি সেই রাষ্ট্র ও সমাজের ইতরামির বঃহিপ্রকাশ হয় না? আর তাদের সম্পর্ক বৈধ বা অবৈধ এটা বলার অধিকার রাষ্টের প্রশাসনকে কে দিয়েছে?
আসলে আমরা এমন এক মুর্খ, অসভ্য, অসচেতন, অবিবেচক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আছি, যেদেশে বিয়ের আড়ালে চার বিবি গ্রহণ, স্ত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে যৌন-স্বেচ্ছাচার, ধর্ষণ, শারিরীক নির্যাতন এগুলি খুব জায়েজ। আর দু’জন তরুণ-তরুণী বিয়ে ছাড়া ভালোবেসে নিজেদের সম্মতিতে একসাথে থাকলে চাইলে, একসাথে সময় কাটালে একদম নাজায়েজ! কি নোংরা আর জঘন্য আমাদের রাষ্টের ন্যায় বোধ!