স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে যে কোনো রাজনৈতিক দলের আদর্শ নীতির ও গঠনতন্ত্রের মাঝে সমাজতন্ত্র নামে একটি নীতি ও আদর্শের কথা লেখা থাকতো আজ সেটা লেখা থাকলেও বাংলাদেশের ৭৮% ভাগ সম্পদের মালিক পুঁজিবাদী সমাজ, তাদের সাথে ঐক্য হবে কি করে।
বিএনপি জামাতের দুঃশাসন ও দুর্নীতির কথা আমাদের হরফে হরফে মনে রাখতে হবে, হরতালের নামে সমগ্র দেশে মানুষ পুড়িয়ে যে তাণ্ডব হয়েছিলো তা আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, জঙ্গি দমনে বিএনপি জামাতের সাথে বাংলার মানুষের কোনোই ঐক্য হতে পারে না, তার মানে এই নয় যে হুশ করে হেফাজতের সাথে কাদের এতো সখ্যতা সেটা দেখেও না দেখার ভান করে বসে থাকতে হবে। আমাদের সকলেরই জানা আছে যে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হয়ে যাবার পর ৭২ এর সংবিধানে ফিরে আসতে পারছি কিনা।
বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশেই আবার ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে গৃহীত চতূর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে একদলীয় (বাকশাল) শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়, প্রশ্ন আসতে পারে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমেই সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করা হয়েছিলো কিনা? বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করাই ভালো কারণ ৭২ এর সংবিধানে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ নিতেন কিন্তু চতুর্থ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতি স্পিকারের কাছে শপথ নেবেন। সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর যে পরিবর্তন সাধিত হয়েছিলো সেটার জন্যে বাংলাদেশ প্রস্তুত ছিলো কি? বাংলাদেশের বর্তমান পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত সম্পূর্ণরূপে ৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া, কারণ রাষ্ট্রের মৌলিক নীতির একটি নীতি ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ৭২ এর সংবিধানে না আসার বিকল্প কোথায় ?
কে কতবার কাশী গিয়েছেন কে কতবার ওমরাহ করেছেন কে কত বড় ধার্মিক সেই প্রতিযোগিতায় আপনারা থেকেছেন ব্যস্ত, একে অপরকে দোষারোপ করেছেন প্রতিটি মৃত্যুর কারণ। সেই সুযোগে জঙ্গিদের চাপাতির নীচে ঝরে গেলো বুদ্ধিজীবী, ব্লগার, প্রকাশক, লেখক, পুলিশ, বিদেশী অতিথি, সংখ্যালঘু আর ধর্মপ্রাণ মানুষের প্রাণ, আজ আধুনিক অস্ত্রে সুসজ্জিত জঙ্গিদের দখলে এই সোনার বাংলা, জামাত-শিবিরের উল্লাসে ক্ষত বিক্ষত এই দেশ। পারবেন কি আপনারা ফিরিয়ে দিতে ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত হারিয়ে যাওয়া সেই সোনার বাংলা।
জঙ্গি দমন শুরু হয়েছে কাদের স্বার্থে, জঙ্গি দমনে ঐক্যে হচ্ছে কাদের সাথে? আগে দল ঠিক করতে হবে পরে ঐক্য। ধর্মের ভিত্তিতে পাক-ভারত ভাগ হবার পর ২৩ বছরের দুঃশাসনের হাত থেকে মুক্তি পেতে ধর্মকে ধুয়ে মুছে মানুষ মুসলমান বাঙালি থেকে শুধু বাঙালি হয়েছিলো, আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে হয়েছিলো আওয়ামীলীগ।
স্বাধীনতার পর ৪৭ বছরে আমরা আবার বাঙালি থেকে মুসলমান বাঙালিতে পরিণত হয়েছি, হিন্দুদের তাদের নিজ দেশ থেকে করেছি বিতাড়িত, বৌদ্ধ মন্দির ভেঙ্গে করেছি তছনছ, সবার চোখের অন্তরালে ক্ষমতাবানদের দাপটে লক্ষ লক্ষ অর্পিত সম্পত্তি ও সংখ্যা লঘুদের জমি হয়ে যাচ্ছে জবর দখল, তারপর জঙ্গি দমনে কাদের সাথে ঐক্য? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন জঙ্গি দমনে ঐক্যের প্রয়োজন এবং আমাদের ঐক্য হয়ে গেছে।
সরকারী দলের ভেতরে অগণিত হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারী। দলের মাঝে দুর্নীতি পরায়ণ নেতা কর্মী, জামাত-শিবিরের অনুপ্রবেশকারী, হাইব্রিডদের চিহ্নিত করে দলকে পরিচ্ছন্ন করার কর্মটাই করতে হবে সবার আগে, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী নিজেই বলেছেন দলে তিনি ছাড়া বাকী সব্বাইকেই টাকা দিয়ে কেনা যায়।
হেফাজতে ইসলাম জুম্মাবারে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক খুতবা প্রত্যাখ্যান করেছে কি, খুতবাতে কি শোনানো বা শেখানো হচ্ছে তা আজকাল সোশিয়াল মিডিয়াতে স্পষ্ট ভাবেই দেখা যাচ্ছে। ধর্ষণের বিভৎসতা আজ সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে, ১ বছরের শিশু থেকে ৮০ বছরের নারী এমনকি গবাদি পশু পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার।
কুষ্টিয়া পিস স্কুলের সভাপতি হচ্ছেন কুষ্টিয়া আওয়ামীলীগের সভাপতি, বগুড়াতে আওয়ামীলীগের সভাপতি সম্পাদকের সাথে জামাত নেতা মিলেমিশে জঙ্গি বিরোধী আন্দোলন করছেন।
মনে আছে কি কুষ্টিয়াতে সরকারী দলে শিবিরের নেতাদের রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়েছে।
মনে আছে কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগেই জানতেন গুলশানে একটি জঙ্গি হামলা ঘটতে যাচ্ছে, এরপর ২০ জন নিরীহ মানুষের গলা কাটা গেলো, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি এতো আগেই জানতেন তবে মুহূর্তের মাঝেই ঘটনা ঘটে যাবার আগেই সমগ্র গুলশান এলাকাতে রেড এলার্ট জারি করতে পারতেন, জঙ্গিদের কি ভাবে প্রতিহত করতে হবে সেটা জনগণের চাইতে নিশ্চিতভাবে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাল করেই জানা। আমরা সাধারণ জনগণ এক্ষেত্রে সরকারের আদেশ নির্দেশ পালন করবো আর এটাই হওয়া উচিত।
ঢাকায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের এক সম্মেলনের টিআর-কাবিখার অর্থ আত্মসাৎ নিয়ে এমপিদের সমালোচনা করতে গিয়ে আমাদের সম্মানিত তথ্য মন্ত্রী সংসদের প্রতিটি সদস্যকে চোর হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন, লজ্জাটা শুধু সংসদ সদস্যদের নয় বরং পুরো একটি জাতির।
৫৭ ধারাটি কি শুধু মাত্র সাধারণ মানুষের জন্যেই প্রযোজ্য? নেতা মন্ত্রীরা কি এর ঊর্ধ্বে? ৫৭ ধারাকে পরিবর্তন করে ডিজিটাল ৩২ ধারা নাম দিয়ে পুরাতন মদ কে নতুন বোতলে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। দেশটা এখন আস্তিকদের তাই নাস্তিকদের গলা কেটে রাস্তার কিনারে ফুটপাথে ফেলে দেয়া হচ্ছে, জলপাই রঙের ভাল্লুক তনুদের সেনানিবাস এলাকায় নাকি ধর্ষণ করে খেয়ে ফেলছে। এসব মানুষের মানসপটে মনে আছে ও থাকবে, কোনো আমলে কত অপরাধ হয়েছে জনগণ সেটা বিবেচনায় করে না, বিএনপি সরকার নাকি আওয়ামীলীগ সরকার ভালো সেটা বিবেচ্য বিষয় না, মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা চায়।
মানবতার নামে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের হাইব্রিড অনেক নেতাদের মাঝেই সাম্প্রদায়িক মানসিকতা কাজ করছে, বাংলাদেশকে সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে সংবিধানে রাষ্ট্র ধর্মের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, এদের অনেকেই মুখে মুখে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বললেও ইহুদি ও হিন্দু বিদ্বেষী মনোভাব প্রকাশ করছেন যা জাতির জন্যে খুবই দুঃখজনক।
সমগ্র পৃথিবীতেই জঙ্গি হামলা ঘটছে বিধায় বাংলাদেশেও ঘটবে, এ ধরনের বক্তব্যের সাথে জনগণ একমত নয়, বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও কৃষ্টি অন্তত তা বলে না।
তদন্তে প্রমাণিত হচ্ছে সরকার অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই জঙ্গিদের লালন পালন করা হচ্ছে, তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে ফটিকছড়ির গহীন জঙ্গলে কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররাই জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলো ও ধারও পড়েছে বেশ কয়জন, বাংলা ভাই মাদ্রাসা ছাত্রদের সংগঠিত করে জঙ্গি বাহিনী তৈরি করেছিলো, জঙ্গিরা আজ মাদ্রাসা ছেড়ে সরকার অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্থান করে নিয়েছে, অথচ কিছুদিন আগেই আমাদের শিক্ষা মন্ত্রী অপকটে বলে গেলেন মাদ্রাসায় জঙ্গি খুঁজে পাওয়া যায় না। সাধারণ মানুষ কি সব ভুলে গেছে?
আওয়ামীলীগের নেতার সন্তানরা আজ জঙ্গি। ছাত্রলীগের নেতারা জঙ্গি দলে যোগ দিয়েছে এটাই আজ কঠিন বাস্তবতা।
বঙ্গবন্ধুর আশীর্বাদ ৭২ এর মুজিব সনদ বাদ দিয়ে এখন কি আমরা মদিনা সনদ দিয়ে দেশ চালাবো?
ঐক্যে হচ্ছে কাদের সাথে?
আমরা ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর মুসলিম বাঙালি থেকে শুধুই বাঙালি হয়েছিলাম, আমরা বাঙালি জাতি এটাই ছিলো আমাদের গর্ব, বঙ্গবন্ধু একজন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের প্রধান হিসাবে ঐক্যের দালাল আইন প্রণয়ন করে ছিলেন, সে সময় রাষ্ট্রের সংবিধানে কোনো ধর্মকেই প্রাধান্য দেয়া হয় নাই। জনগণ তাদের গর্বের সাদাকালো আওয়ামীলীগ ফেরত চায়, তারা এই রঙ্গিন আওয়ামীলীগ প্রত্যাখ্যান করে, বাঙ্গালিদের একটি ধর্ম নিরপেক্ষ শ্লোগান জয় বাংলা, জয় বাংলাই হোক আমাদের সংবিধানের প্রথম শ্লোগান, জয় হোক বাংলার মেহনতি মানুষের, জয় বাংলাকে রাজনীতি করণ থেকে দুরে থাকুন।
বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসাবে পৃথিবীর বুকে দাঁড় করাতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রমকে অস্বীকার করার উপায় নেই, কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো আর তার দলকে একা পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারেন না, দলের সহকর্মীদের উপর নির্ভর করেই প্রধানমন্ত্রীকে চলতে হয়, তাই দলের মাঝে স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল কর্মী থাকা প্রয়োজন।
প্রথম আলোতে প্রকাশিত গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির একটি গবেষণায় একটি দুঃখজনক তথ্য প্রকাশিত হয়, যেটাতে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া ৭৬ হাজার ৩৬১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার প্রমাণ উল্লেখ্য করা হয়, তাহলে বিষয়টি দাঁড়াচ্ছে যে দুর্নীতির পরিমাণ বর্তমান সরকারের আমলে বিগত সরকারগুলোর আমলের চাইতে কোনও অংশেই কম নয়। হলপ করে কেউই বলতে পারবে না যে বাংলাদেশকে দুর্নীতি মুক্ত করতে বর্তমান সরকার সফলতা অর্জন করেছে। জয় বাংলা শ্লোগানে স্লোগানে গলা ফাটিয়ে ফেলা যায় বটে কিন্তু অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধি অর্জন করতে চাই কঠোর দুর্নীতি দমন ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে আমাদের অর্থমন্ত্রী কি পদক্ষেপ নেবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়, চোর পালিয়ে যাবার পর বুদ্ধি বাড়লে দেশের কোনোই উপকার হবে না, সময় থাকতেই এ বিষয়ে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, রাজস্ব আদায়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে না পারলে ভবিষ্যতে টাকা পাচারের পথকে রোধ করা আরও দুষ্কর হয়ে দাঁড়াবে। ৫৬০ টি কেনো ৫০৬০টি ইসলামিক প্রকল্প প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিলেও আইন শাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে মানুষকে সত বানানো যাবে না।
নিশ্চিত ভাবে এটি স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হলে, বাস্তবতার সাথে মিল রেখেই রাজনীতির পটভূমি তৈরি করতে হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল চার নীতি গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে আমাদের সংবিধানে যে বিষয়গুলো তথা আইনগুলো মূল চার নীতির সাথে সাংঘর্ষিক যে আইনগুলোকে বিভিন্ন সময়ে কাটা-ছেরার মাধ্যমে পরিবর্তিত করে সংবিধানে সংযুক্ত করা হয়, ১৫তম সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ও 'বিসমিল্লাহ-রাহমানের-অর-রহিম' সংবিধান থেকে 'আল্লাহর প্রতি নিরঙ্কুশ বিশ্বাস এবং আস্থা' ও ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির অনুমতি প্রদান করা হয়, আদিবাসীদের স্বীকৃতি অস্বীকার করে, উপজাতি ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালী এবং বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে পরিচিত হইবে বাংলাদেশী বলিয়া পরিচিত হইবে বলিয়া উল্লেখ্য করা হয়।
১৯৭২ সালের সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। সেই ধারাকে পরিবর্তন করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে আজ জামাত শিবিরকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে চলে আসার সুযোগ করে দেয়া হয়, জামাত শিবির সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে ইসলামিক রাষ্ট্র পাকিস্তানের সর্বাত্মক সহায়তা গ্রহণ করে, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে পাকিস্তান তাদের ক্ষতকে খুব সহজেই ভুলে যাবে না, ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে অস্বীকার করে বাংলাদেশের রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করে রাখার উৎকৃষ্ট মাধ্যম এই জামাত শিবির, কাজেই পাকিস্তান সেই সুযোগকে কোনো ভাবেই হাতছাড়া করছে না, জামাত শিবিরকে ব্যবহার করেই সুযোগ বুঝে আমাদের দেশকে একটি ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজাকারদের বিচার বানচাল করতে ধর্মকে ব্যবহার করার অপবাদ দিয়ে সারা বিশ্বে অপপ্রচার চালাবার সুযোগ পায়। যে সরকারের বা দলের সাহায্যে রাজাকাররা বাংলাদেশের মাটিতে মন্ত্রিত্ব লাভ করে আজ সেই দলের প্রধান বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়ে প্রহসনের রাজনীতি করার সুযোগ গ্রহণ করছে।
রাজনৈতিক ভাবে এই অপ-শক্তিকে প্রতিহত করতে আমাদের এ সমস্যার মূলে আসতে হবে, বাংলাদেশ থকে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ না করে জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করার মানেই জামাত শিবির ও তার অনুচরদের অন্য নাম রাজনীতি করার সুযোগ কে দেয়া। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ইতিমধ্যে জামাত শিবিরের একটি বিশাল অংশের অনুচররা স্বাধীনতার স্বপক্ষের দলগুলোর মধ্যে তাদের জায়গা করে নিচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে স্বাধীনতার সপক্ষের দলের সদস্যরা অনেকেই এইসব অনুচরদের রজনীগন্ধা ফুলে দিয়ে দলের মাঝে বরণ করে নিচ্ছেন, এই সব দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক ব্যক্তি-বর্গদের ঠেকাতে না পারলে একজন অক্লান্ত পরিশ্রমকারী প্রধানমন্ত্রীর সকল প্রচেষ্টাই বিফলে যাবে।
সাম্প্রদায়িকতার এই কালো থাবা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করতে এখনি সুষ্ঠু ও সঠিক পদক্ষেপ হবে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ও 'বিসমিল্লাহ-রাহমানের-অর-রহিম' বিসর্জন দিতে না পারলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা থেকেই যায়।