ফেরদৌস নাহার

ফেরদৌস নাহারের জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে। তবু নির্দিষ্ট কোনো জেলা নয় পুরো দেশটাকেই বাড়ি মনে করেন। পথের নেশা তাকে করেছে ঘরছাড়া, ঘুরতে ঘুরতে এখন আটলান্টিক মহাসাগরের পাড়ে, কানাডায়। সেখানে জীবন যাপনের পাশাপাশি জীবন উৎযাপন করেন কবিতা এবং লেখালিখির খরস্রোতা নদীতে বৈঠা বেয়ে। কবিতার পাশাপাশি লিখছেন গদ্য, অনুবাদ ও গান, আঁকছেন ছবি। এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে ১৫টি কবিতা ও ৩টি প্রবন্ধের বই। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারত থেকে অসংখ্য যৌথ কবিতা সংকলন। জনপ্রিয় ব্যান্ডদল ‘মাইলস’-এর সংগীত রচয়িতা। প্রিয় বিষয় মানুষ এবং প্রকৃতি। প্রকৃতির মাঝে সবচেয়ে প্রিয় সমুদ্র।

সিন্ধুর বান আজ দুইপায়ে

নারীরা আজন্ম ভালোবাসে নদীর ছবি, তা বলে নদীও কি তাদের

 

গান গাওয়া সন্ধ্যায় বারবার তালকাটা সুরে জেনে যায়

নদীও নারী নয়, নারীও নদীর কাছে পাবে না কিছু

 

হাজার বছর বনবাসের পর বাংলার সব নদী যেদিন ঘরে ফিরে এলো

নারীরা সেদিন কেনো শাঁখ বাজালো না? প্রশ্ন জাগে তারায় তারায়

ওই দেখ অভিষেক ছাড়া একান্ত অভিমানে নদী ভেসে যায়  

বহুবার নারীও যেভাবে গিয়েছে ফিরে অভিমান ডুবুডুবু চোখে

 

নাম না জানা এক কৃষকের চোখ থেকে গড়াচ্ছে দৃশ্যঘোরের বেদনা

সেও জেনেছে, এভাবে চিরকাল বয়ে যেতে পারে না, দেখছে সে-

নতুন এক পৃথিবীর অপেক্ষায় বৃক্ষমায়ায় দাঁড়িয়েছে নারী

প্রকৃতির অভিলাস সংসারের দরজা খুলে চেয়ে দেখে-

লাবণ্যবতীরা আশ্চর্য বিভা ছড়ায় অন্য আলো আয়োজনে 

আকাশের মায়া ক্রমে ঝুঁকে আসছে তাদেরই দিকে অথচ

মেলার মাঝখানে বিক্রি হচ্ছে নারীকে কেন্দ্র করে অসংখ্য গল্পগাছা

বিক্রি হচ্ছে রক্ত-আলতা, আগুনের চুল, সংসারের আদিম মুখোশ

কঠিন ধমক, চুলোর জ্বলন্ত কাঠ আর সাজানো অগ্নি-পরীক্ষা

 

বাতাসের চার হাত, বর্ষার ভরা জোয়ার, অতৃপ্ত নিঃশ্বাস

কিছুই পারছে না তবু ফেরাতে তাকে, খসে যাচ্ছে নক্ষত্রের রূপ 

মেঘলা জীবন থেকে ঝরে পড়ছে ঈশপের গল্পগুলো

 

নদীকে বিদায় দিয়ে, নদীর মতো নারী গান গায় চলে যেতে যেতে

কে তারে রুখতে পারে সিন্ধুর বান আজ তার দুইপায়ে।

 

2281 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।