লাবণী মণ্ডল

নারীবাদী লেখিকা।

দোষ রাকায়েতদের নয়, তাদের লিঙ্গের, রাকায়েতরা লিঙ্গ মাথায় নিয়ে ঘুরে

গাজী রাকায়েত একজন বাংলাদেশী অভিনেতা, নাট্যকার, চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা ও প্রকৌশলী। নাট্য অভিনয় দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হলেও পরে তিনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র নদীর নাম মধুমতী (১৯৯৫)। পরবর্তীতে তিনি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক খেলাঘর (২০০৬), নাট্যধর্মী আহা! (২০০৭), নাট্যধর্মী চন্দ্রগ্রহণ (২০০৮), মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দ্য লাস্ট ঠাকুর (২০০৮), নাট্যধর্মী প্রিয়তমেষু (২০০৯), মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আমার বন্ধু রাশেদ (২০১১) ও গেরিলা (২০১১) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০১৩ সালে তার চলচ্চিত্র পরিচালনায় অভিষেক হয় মৃত্তিকা মায়া চলচ্চিত্র পরিচালনার মাধ্যমে। এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি এখন পর্যন্ত (২০১৭ সাল) এক বছরে সর্বাধিক পাঁচটি বিভাগে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। [২] এছাড়া তিনি ২০১৫ সালের অনিল বাগচীর একদিন চলচ্চিত্রে আইয়ুব আলী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। [৩] ... তথ্যসূত্র: গুগল। 

এটা তার কর্মপরিচয়। তার 'মৃত্তিকা মায়া' দেখে আমি অভিভূত হয়েছিলাম। একবার নয় কয়েকবার দেখেছিলাম। একটা মানুষের ব্যক্তিসত্তাকে বাদ দিয়ে কর্মসত্তা হয় না। যে আর্দশবান তার সবকিছুই আর্দশবান হওয়া উচিত। 

যাহোক, এবার আসি কুকর্মের কথায়। বয়স তার ৫১ বছর। দু'দুটো বিয়ে করেছে। ব্যাপার নয়! কিন্তু এই মাঝবয়সে এসেও রাতবিরাতে তরুণীদের 'পুসি' দেখার স্বাদ জাগে তার, তরুণীদের সাথে রাতভর প্রেমালাপ করতে ইচ্ছে করে। ঘরে একটা বউ রেখে তার আরো কতকিছুই যে ইচ্ছে করে। করতেই পারে, ইচ্ছে করাটা অন্যায় নয়। অন্যায় হলো ইচ্ছেটাকে কারো উপর চাপিয়ে দেওয়া। একাধিক মেয়ের সাথে একই কাণ্ড ঘটান। যেহেতু তিনি নাট্যপাড়ায় বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সেহেতু তাকে মানুষ ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে। কাউকে জোর করে ধরে বসলেও কিছু বলার নেই, যদি তাকে নাটক থেকে বাদ দেয়, যদি তাকে আর নাট্যপাড়ায় প্রবেশ করতে না দেয়! আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি এই রাকায়েত বহু মেয়ের সাথে একই কাণ্ড ঘটিয়েছে, কতজনকে বিছানায় নিয়েছে তা আজও অজানা! এটা শুধু রাকায়েতের সমস্যা নয়, এটা রাকায়েতদের লিঙ্গের সমস্যা। লিঙ্গ মাথায় নিয়ে ঘুরে। বহু রাকায়েত ধরে টান দিবো, জাস্ট সময়ের ব্যাপার। আমার হাসি পায়! এরা ক'জনের বিরুদ্ধে মামলা করবে, ৫৭ ধারা দিবে? 

আজও এক নারী বন্ধু আরো কয়েকজন 'রাকায়েতের' নাম বলে গেলো। তালিকা বেড়ে যাচ্ছে- রাকায়েত তোমাদের হয় আত্মহত্যা করতে হবে নচেৎ বিড়াল হয়ে রুমে বসে থাকতে হবে। রাতে প্রেমালাপ করার স্বাদ জাগাটাকে কমাতে হবে। না'হলে আইসিটি দিয়ে রক্ষা নেই।

আমি এটাও চাচ্ছি না যে, রাকায়েতের বিরুদ্ধে আইসিটি ৫৭ ধারা মামলা দেওয়া হোক। তবে, তাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য মামলা দিতেই হবে। ৫৭ ধারা কেন নয়! কারণ, এই অসভ্য ৫৭ ধারার বিরুদ্ধে আমরাও রাস্তায় দাঁড়িয়েছি, ৫৭ ধারা প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছি। সুতরাং শত্রুশ্রেণির বিরুদ্ধেও এই মামলা করার পক্ষে নয় আমি। তবে, রাকায়েতের বিরুদ্ধে যে জনমত তৈরি হয়েছে তাতে রাকায়েত কুপোকাত। আর জীবনে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না। যতই সমাজব্যবস্থা তাদের হোক, সোশ্যাল সেন্টিমেন্ট বলে একটা কথা আছে। 

সঙ্গীতার পক্ষে আবালবৃদ্ধবণিতা দাঁড়িয়েছে। পুরো সোশ্যাল মিডিয়া সঙ্গীতার পক্ষে। তাই তো হওয়ার কথা। আগামীকাল সমাবেশের মধ্যদিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সুতরাং রাকায়েতের চেলাবেলাদের এখনই সাবধান হওয়ার সময়। 

যাদের যাদের সাথে এরকম কাণ্ড ঘটিয়েছে প্রত্যেকের মুখ খোলা উচিত। সঙ্গীতার পক্ষে দাঁড়ানো নৈতিক দায়িত্ব। সঙ্গীতার উপর যে হয়রানি চালাচ্ছে এর বিরুদ্ধে সমস্বরে আওয়াজ তোলা উচিত। বিশেষ করে নারী সমাজের আওয়াজটা দৃঢ় হোক। দেশ, বিদেশে ছড়িয়ে যাক এ প্রতিবাদ। সকল রাকায়েতদের কম্পন তৈরি হবে। 

আর হ্যাঁ, রাকায়েতের পরিবারের উচিত রাকায়েতকে সত্যের মুখোমুখি করা, তার বন্ধুবান্ধবেরও এটা করা উচিত- যদি তাদের ভিতর মনুষ্যত্ববোধ থাকে। তাদের রাকাযেতকে বাধ্য করা উচিত জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়ার জন্য। 

তীব্র নিন্দা জানাই। জয় হোক সঙ্গীতার, পতন হোক রাকায়েতদের মতো লম্পটদের।

1952 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।