দিনা ফেরদৌস

আমেরিকা প্রবাসী। লেখালেখির পাশাপাশি ছবি আঁকেন জল রঙে।

পরিবার থেকে বাইরের মানুষকে বেশি বিশ্বাস করলে ঠকতে হবে নিশ্চিত

আমরা ভালোবাসার জন্যই বেঁচে থাকি অথবা ভালোবাসাই আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। প্রাণীকূলের জন্য ভালবাসা আবশ্যক। তা যেমন একটি পাখির জন্য, তেমনি একটি মাছের জন্য, ঠিক তেমনি কথাটি গাছের জন্যেও প্রযোজ্য। গাছে পানি দিয়ে যেমন গাছের যত্ন নিই, তেমনি প্রেম দিয়ে আমরা মানুষকে বা মানব হৃদয়কে বাঁচিয়ে রাখি। আমার আজকের বিষয় ভালোবাসা বা প্রেম নিয়ে। প্রেমটা নারী -পুরুষের বা কিশোর-কিশোরীর প্রেমও হতে পারে। প্রেমের বয়সে কম বেশ সকলেই প্রেমে পড়ে, বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীর প্রেম। এটা হরমোনের কারণেই হয়, না চাইলেও বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ কাজ করে। এটা মানুষের জৈবিক চাহিদা, আমরা উপেক্ষা করতে পারি না, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আবার অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে তা যৌন বিকৃতিতে পরিণত হয়। যৌন চাহিদা যাতে যৌন বিকৃতিতে পরিণত না হয়, তার জন্য নিজেকে বুঝাতে হবে। বুঝাতে হবে আমরা সমাজে বসবাস করি। সুন্দরভাবে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারি, তার জন্যে কিছু অপেক্ষা করতে হবে। নিজেকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে সব কিছুর আগে। শরীর চাইলো বলেই আমি যেখানে সেখানে, যখন তখন যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াবো এর কোন মানে হয় না। যৌন চাহিদা আর যৌন বিকৃতি দুটি সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। যৌন বিকৃতির ফলে মানুষ হিতাহিতজ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আজকাল অহরহই রেইপ হতে দেখা যায়। যেমন ধরা যাক, ফেইসবুকে কোনো মেয়ে যখন তার সুন্দর ছবি পোস্ট করে, তখন তার অসংখ্য মেসেজ আসতে থাকে তার রূপের প্রশংসায়। এমন না যে, যারা এইসব মেসেজ দেয়, তারা একজনকেই দেয়, তারা কমপক্ষে বিশ /পঁচিশ জনকে এই জাতীয় মেসেজ দেয়, যাকে বলে বড়শি ফেলা। যে টোপ দেবে সেই ধরা খাবে। তা একজন, দুইজন, তিনজন হতেই পারে। আহাম্মকের সংখ্যা তো আর কম নয় দুনিয়ায়। সবার অবশ্য তারা রূপের প্রশংসা করে না। মানুষ বুঝে বুঝে প্রশংসা করে। যে কবিতা লিখে তারে কবিতা দিয়ে টোপ ফেলে। কেউ কেউ আবার গান পাঠায়, এতো বাছাই করা গান, শুনলে মনে হবে আপনার জন্যে তার প্রেম কাতর হৃদয় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে আরেক পার্টি আছে, শুভ সকাল, শুভ দুপুর, সন্ধ্যা, বিকেল, রাত, শুভ মাঝরাত দিতেই থাকবে, একটা রিপ্লাই করেছেন তো, সে কথার জালে আটকাবে। এমন কথা বলবে আপনি উত্তর না দিলে হৃদয়ে জ্বালা শুরু হবে।

এটা শুধু ফেইসবুকের কাহিনী বললাম। এর বাইরে বিয়ে বাড়িতে দেখা, স্কুল- কলেজের গেইটে দেখা, স্কুল কলেজের কথা নাই বলি, আত্নীয়ের আত্নীয়, পাড়ায় নতুন ভাড়াটে হয়ে আসা, বান্ধবীর চাচাতো, মামাতো, খালাতো, ফুফাতো ভাই, কথা আর না বাড়িয়ে যা বলতে চাই কোনভাবে না হয় প্রেম হয়েই গেলো এদের কোন এক জনের সাথে চলতি পথে। কয়েকটা ডেটিং হয়েই গেলো। সামনে জন্মদিন একবস্তা বা বিশাল এক ঝুড়ি ফুল আর কেক নিয়ে হাজির হয়ে আপনাকে বা তোমাকে এমন সারপ্রাইজ দিলো বয়ফ্রেন্ড যা জীবনে নিজের বাপ -মা'ও করেননি। আবেগে চোখ দিয়ে পানি চলে আসলে বুকে ঝাপাইয়া পড়লেন। সেও বুঝতে পারলো কিভাবে আপনাকে ঘায়েল করা যায়। বাসায় গিয়ে আপনার রাগ হলো মা- বাবার প্রতি, যারা জীবনে কোনোদিন আপনার বার্থডে সেলিব্রেশন করেননি। আপনার মনে হলো মা-বাবা আপনাকে নিয়ে যতোটা ভাবেন না, প্রেমিক আপনার ব্যাপারে তারচেয়ে বেশি সিরিয়াস। আপনি তাকে মন খুলে পরিবারের গোপন, খুটিনাটি কথা বলতে থাকলেন, সে আপনাকে জামা, কসমেটিক গিফট করার পাশাপাশি, ব্রা-প্যান্টি সহ স্যানিটারি ন্যাপকিনও কিনে দেয়। সে আপনাকে নিজের বউ মনে করে, এমনকি বন্ধু মহলে আপনাকে তার বউ বলেও পরিচয় করিয়ে দেয়। আপনি যেই কাজ করতে আগ্রহী, সেই কাজে পরিবার দেয় বাধা আর সে দেয় উৎসাহ। আপনি বুঝতে পারেন, পরিবার আপনাকে মোটেও বুঝে না, যতোটুকু সে বুঝে। আপনি স্বপ্ন বুনতে থাকেন, সে পাশে থাকলে, আপনি অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবেন। সে সেটা শুধু বুঝে তা নয়, এমনও বলে, পরিবার বেশি বাড়াবাড়ি করলে, তার কাছে চলে যেতে। আপনিও তাই ভাবেন। এবার সে আপনাকে বিশ্বাস দেয় সব কিছুর আগে আপনার পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তবেই বিয়ে, আপনিও মনে করেন, একদিন সবাইকে দেখিয়ে দেবেন এই ছেলে ভুল ছিলো না, এই ছেলে কোনোদিন আপনার খারাপ চায়নি। তারপর যেদিন ছেলেটি ওফার দিল, শারীরিক সম্পর্ক তৈরী করার আপনার মোটেও খারাপ লাগেনি, কারণ আপনি জানেন সেই আপনার স্বামী। বিয়ে না হলেও মনে মনে তাকে ছাড়া দুনিয়ায় আর কোনো পুরুষকে আপনি কল্পনাও করেননি। আর সেতো চায়ই আপনি পড়াশোনা শেষ করুন সব কিছুর আগে। তাই বিয়ের কথা এখন তোলার কোনো মানেই হয় না। এভাবে একদিন, দুইদিন, তিনদিন, শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার পর আপনার নিজেও বিষয়টিকে উপভোগ করতে শুরু করেছেন। মাঝেমধ্যে এইসব দৃশ্যের ছবিও তুলে রাখেন দুজনে মজা করে। নিজেদের সুন্দর মুহূর্তের ছবি দেখে শিহরিত হন নিজেরাই। হঠাৎ একদিন দেখলেন কিছু নিয়ে মতের মিল হচ্ছে না বা ছেলেটা বিপদে পড়েছে, ভবিষ্যৎ বউ হিসেবে তাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করার কথা সে বলছে, আপনি টাকার জোগাড় করে দিতে পারছেন না, তখন দেখলেন তার আরেক রূপ। সে সমানে আপনাকে খোঁটা দিয়ে যাচ্ছে, এতোদিন আপনার পিছনে টাকা খরচ করার। বন্ধু বান্ধবদের বলে বেড়াচ্ছে আপনার নিচে সে কতো টাকা খরচ করে আসছে এতোদিন। আপনার কাছের বান্ধবীরাও আপনাকে দোষারোপ করছে, প্রেমিকের টাকা ভাঙ্গিয়ে খাওয়ার জন্য। যখন উপায় নেই, তখম পরিবারকে জানালেন তাকে টাকা দিতে। পরিবারের তো আগে থেকেই এই ছেলেকে পছন্দ না, তারা সহজ সমাধান দিলেন এই ছেলেকে ছেড়ে দে। আপনিও নিজের ভুল বুঝতে পেরে দূরত্ব তৈরি করলেন। এরমধ্যে একদিন জানতে পারলেন বাজারে আপনার ভিডিও একটি ভাইরাল হয়েছে। মানুষ ছিঃ ছিঃ দিচ্ছে, পরিবারে বাপ, ভাইয়ের সামনে মুখ দেখাতে পারছেন না। আত্নীয় স্বজন ফোন করে যা তা বলছে আপনার পরিবারের মানুষকে। বন্ধু-বান্ধব আপনাকে এড়িয়ে চলছে, কারণ তাদের পরিবারের লোকজন আপনার সাথে চলতে নিষেধ করেছেন। আপনার মরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে। মামলা করেছেন, পুলিশি জেরায় আপনি হয়রান, আপনার পরিবার হয়রান।

এই জায়গায় এসে আমি বলবো, অনেক হয়েছে এবার স্টপ হোন। পিছন থেকে একবার ভাবুন, যেই মা-বাবা কোনোদিন আপনার জন্মদিন পালন করতে পারেনি, যেই মা-বাবা আপনার বান্ধবীর মতো সুন্দর জামা কিনে দিতে পারেনি, তারা কি খুব ভালো জামা কাপড় নিজে কিনে পড়েছেন, যা আপনাকে দেননি? আপনি একটি বাজে ছেলের সাথে মেলামেশা করেন জেনে কি আপনাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলেন? ঘরে আপনার খাওয়া কি বন্ধ করে দিয়েছিলেন? হয়তো বাইরে যেতে নিষেধ করে দিয়েছিলেন, বকাবকি করেছিলেন, যা শুনতে আপনার খারাপ লেগেছে? এখন এই পরিস্থিতিতে দুনিয়ার সবাই যখন আপনাকে গালি দিচ্ছে, আপনাকে নিয়ে নোংরা কমেন্ট করছে, তখন কে এসে আপনার পাশে দাঁড়িয়েছে? সেই গরীব পরিবার, যার সামর্থ্য নেই কেক কেটে আপনার জন্মদিন পালন করার, কিন্তু প্রতিদিন আপনাকে বাচিঁয়ে রাখতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজকার করছেন এক সাধারণ পিতা। সেদিনের মা বাবার গালিটা খুব লেগেছিল, আজ দুনিয়ায় মানুষ গালি দিচ্ছে আপনার সাথে তাদেরকেও, তাদের লাগছে না? তারাও তো প্রতিদিন বাইরে বের হন। আপনি মরে গেলে কি মানুষের মুখ বন্ধ হয়ে যাবে? তবে মনে রাখুন মানুষের হাজার কাজ আছে, এক সময় ঠিকই ভুলে যাবে, আপনার মতো আরো বহু বেকুব এই রকম ফাঁদে নিত্তনতুন পা দেবে। আজ যারা আপনাকে নিয়ে কথা বলছে, কাল হয়তো তার কাছের কারোও এমন ভিডিও বাজারে আসবে।
 
বাবা মা'তো পক্ষে তো খাচায় রেখে বা শিকলে বেঁধে বাচ্চা পালন করা সম্ভব নয়, সব সময় পাহাড়ায় রেখেও আপনাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সবচেয়ে ভালো হয় যদি একটু জ্ঞান খাটিয়ে নিজে চলতে পারেন। আর নিজের বাবা -মা এতো বড়ো করেছেন আরেক ছেলের কাছ থেকে প্রতারণা পেয়ে মরে যাবার জন্যে নয়, বেঁচে থাকার জন্যে। বাঁচুন নিজের পরিবারের জন্যে, বাঁচুন নিজের জন্যে, যে পরিবারের জন্যে বহু দায়িত্ব আছে আপনার। আপনি মরলে কার কী? সেই ছেলেটার কিছুই হবে না, কারণ সে আপনাকে কোনোদিন ভালোই বাসেনি। যে আপনাকে ভালোবাসবে, সে আপনাকে, আপনার শরীরকে রেসপেক্ট করবে, যার তার সামনে তোলে ধরবে না। আপনাদের মধ্যে যে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে তা ভুল বলছি না, ভুল বলছি এই কারণে যে, ভুল মানুষের সাথে কাজটি হয়েছে। শারীরিক সম্পর্কের ইচ্ছে থাকে বলেই মানুষ প্রেম করে। তা না হলে প্রেম করার দরকার কী? বিয়ের সময় আসলে পরিবার দেখেশুনে যেখানে দেবেন, সেখানে চুপ করে বিয়ে করলেই হয় , বা কাউকে ভালো লাগলে দুই পরিবারের পোষালে বিয়ে ঠিক করে যথা সময়ে করলেই হয়। মাঝখানে এই দেখাদেখির মানে কি? আজ দেখা করে হাতে হাত রাখবেন, কাল বুকে, পরশু বিছানায়...
 
জৈবিক চাহিদা মানুষের আদিম চাহিদা, শারীরিক চাহিদা ; ঘুম, খাওয়া, হাগুপাদু করার মতো জরুরী। জৈবিক চাহিদা আছে বলেই, মানুষ রোজগার করে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে যায় রিস্ক নিয়ে, ব্যবসা করে, চুরি করে, ডাকাতি করে, খুন করে; সব কিছুই করে পরিবারের জন্য, বিয়ের জন্য, নিজের মনমতো সঙ্গীর জন্য, বাচ্চা জন্ম দানের জন্য, সেই বাচ্চাকে বড় করে তোলার জন্য। আজ পুরো সমাজের কাছে আপনি নষ্টা ভ্রষ্টা, আপনার মা-বাবার দিকে একটু তাকিয়ে দেখুন, আপনি সেই নিষ্পাপ ছোট্ট শিশুটিই আছেন, যাকে এখনো তারা বুকে আগলে রাখতে চান। প্লিজ বাচ্চারা বা বড়োরাও মা-বাবার অবাধ্য হইয়ো না, তারা কোনো কিছুই তোমাদের খারাপের জন্য করবেন না, মনে রেখো।
 
আর ঘরের কথা বাইরে বলতে যেয়ো না, এমনকি কাছের বন্ধু বান্ধবীর কাছেও না। স্বার্থে আঘাত লাগলে, এদের যেই নোংরা চেহারা বেরিয়ে আসবে, তা মেনে নিতে কষ্ট হবে তোমাদের। পরিবার থেকে আর ভালো কোনো বন্ধু হয় না মনে রেখো। পরিবার থেকে বেশি কিছু কেউ করতেও পারবে না তোমার জন্যে।
 
আর মা-বাবাদের জন্য ম্যাসেজ হলো, সন্তানদের যে আপনারা কতটুকু ভালো বাসেন তা আমি জানি। মাঝে মধ্যে সন্তানদের সাথে সহজ হোন, গল্প করুন, বাইরে বেড়াতে নিয়ে যান, সব সময় যে শুধু আত্নীয়স্বজনের বাসায় বেড়াতে যেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। চাইলে পরিবারের সকলে মিলে জন্মদিনে ছোট্ট একটি কেক কেটে উৎযাপন করুন, সে বুঝতে পারবে তার জন্মদিন আপনাদের কাছে কতো গুরুত্ব রাখে। বেশি না পারলে একটি চকোলেট এনে দিতে পারেন রাত বারোটার পর তার জন্মদিন উইশ করে। অথবা তার পছন্দের খাবার বাসায় রান্না করে সেদিন সবাই মিলে খেতে পারেন। তার সাথে গল্প করুন স্কুলে বা কলেজে আজ কেমন গেলো তার দিন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এমনভাবে সহজ হোন, যাতে বাইরে কিছু ঘটলে, বাসায় এসে বলে হালকা হতে পারে। অনেক পরিবারে কড়া শাসনের ফলে, বাইরের ঘটে যাওয়া ঘটনা ঘরে বলার সাহস পায় না। বন্ধু বান্ধবদের বলে সমাধান হতে হতে ব্যাপারটা যখন খারাপের দিকে চলে যায়, পরিবারের নাগালের বাইরে, তখন কিছুই করার থাকে না। সময় থাকতে সাবধান হলে অনেক সমস্যার সমাধান গোড়াতেই করা যায়।
 
অবশেষে বলবো পরিবারকে ভালোবাসুন, ভরসা করুন, পরিবারে নিজের বিশ্বাসের জায়গা তৈরি করুন উভয় দিক থেকেই। কোনো সম্পর্কে জড়াবার আগে হাজার বার ভাবুন। জন্মদিনের কেক, ফুলের তোড়া, আর দামী ড্রেসের সঙ্গে পরিবারের ভালোবাসাকে তুলনা করতে যাবেন না। মনে রাখবেন পরিবারের বাইরের কেউ কোনো স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসার প্রশ্নই আসে না। আপনার শরীরের মূল্য দুই হাজার টাকার কেক বা পাঁচশ টাকার ফুলের তোড়া নয়, যে এগুলো পেলেই ভালোবাসা মনে করে খুশিতে বগ বগ হয়ে সব দিয়ে দেবেন। তারচেয়েও বড় কথা সুন্দর সময় উপভোগ এক জিনিস আর তার ফটো বা ভিডিও করে রাখা অন্য জিনিস। এই জাতীয় মুহূর্তে ফটো বা ভিডিও করা থেকে বিরত থাকুন। আর আমার নিজস্ব অভিমত হচ্ছে যারা এইসব ছবি বা ভিডিও করে সেইসব পুরুষ, যারা মনে করে তাদের ইজ্জত যায়নি, ইজ্জত শুধু মেয়েটিরই গেছে, ওদেরকে ওদের পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয় করা উচিত, যেমনটি করা হয় মেয়েদের বেলায়। সেইসব ছেলেদের দৃষ্টান্তমূলক এমন শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক যে অন্য কোনো ছেলে এই জাতীয় ছবি বা ভিডিও বানাতে চৌদ্দবার ভাবে। এইসব ছেলেদের কাছে বা তার তার পরিবারের সাথে সামাজিক উঠা বসা নিষিদ্ধ হোক।
 
আগামী দিনের জন্য প্রত্যাশা রইলো, প্রেম, ভালোবাসা কোনো কিছু উপেক্ষা করে নয়, শারীরিক সম্পর্কের প্রয়োজনকে অস্বীকার করে নয়, সবকিছুই যেনো হয়, তবে সুন্দরভাবে, শুধুই নিজেদের জন্যে, সঠিক মানুষের সাথে। আর বেঠিক মানুষকে তা বুঝতেই পারছেন, যে আপনার পরিবারকে রেসপেক্ট করবে না, আপনাকে অহেতুক নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে, ভুল বাল বুঝাবে, শারীরিক সম্পর্কের সময় ছবি বা ভিডিও করে রাখতে চাইবে । কোনো সম্পর্কে জড়াবার আগে বার বার ভাবুন এর ভবিষ্যৎ কী হতে পারে? ভালোবাসা হচ্ছে ভালো থাকার জন্যে, ভালবাসা যদি যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তবে সেখান থেকে বেরিয়ে আসুন। যে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করে, সে আপনার যোগ্য আজ যেমন না, আগামীতেও হবে না। ভয় দেখিয়ে বিয়ে করলে সারা জীবন সে আপনাকে একই ভয় দেখাবে। আজি এই বাজে সময়ের মোকাবিলা করুন, দ্রুত তা অতীত হবে। বেচে যাবেন এক পিচাশের হাত থেকে, ভুল মানুষকে বিশ্বাস করলে তার মাসুল তো দিতেই হয়, তবে মনে রাখবেন সারা জীবন মাসুল দিয়ে শেষ করার কোনো মানে হয় না। একটাই জীবন নিজের মতো বাচার অধিকার আপনার আছে। ভালো থাকুন সকলে।
 

1804 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।