সকাল থেকে একটা নিউজ দেখছিলাম বন্ধুদের ওয়ালে। প্রাইভেটকারে নারী ধর্ষণ। এক পুরুষ অফিসে যাওয়ার পথে এ ঘটনা দেখেন। পুরুষটি কিছু একটা ধারণা করেই সামনে এগুতে থাকে। প্রাইভেটকারের ভিতরে মদ্যপ এক ধন্যাঢ্য জানোয়ার রাস্তা থেকে এক নারীকে তুলে ধর্ষণ করছিলো। প্রাইভেটকারের ড্রাইভার ধর্ষককে বাঁচানোর জন্য গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলো, কিন্তু ঢাকা যেহেতু জ্যামের নগরী পেরে উঠে নি। ভিডিওটি দেখেছি।
অনেক বন্ধুরা ইনবক্স করেছেন, আমি সারাদিন কিছু বলতে পারি নি, একইসাথে বাংলাদেশের নারী বন্ধুদের ঐতিহাসিক বিজয়। যত বিজয়ই হোক আমরা তো আর ঘটনাটা ভুলতে পারি না। এভাবে জোর করে ধরে একজন নারীকে ধর্ষণ! আমি মোটেও অবাক হই নি, এটা ঘটতেই পারে এ দেশে। কতটা উন্মাদ হলে এটা সম্ভব! একজন নারীকে এভাবে রাস্তা থেকে ধরে ধর্ষণ করার মধ্যে কি মজা! কিসের এত পাওয়ার! পুরুষাঙ্গের পাওয়ার তো এমন হওয়ার কথা নয়!
জানোয়ারটির বউ আছে, দুটো বাচ্চা আছে। ফেসবুক প্রোফাইল দেখলাম বেশ সন্তানদের ছবি ঝুলানো। তার অর্থ ধর্ষকদেরও সন্তান, বউ থাকে, বাবা-মা থাকে, প্রোফাইল থাকে! ধর্ষকদের কন্যা সন্তানরাও বাবাকে জড়িয়ে ধরে, চুমু খায়। ঠিক কন্যা সন্তানটির এসব আচরণের সময় কি ওদের পুরুষাঙ্গ দাঁড়াইয়া যায়?
এই রনি খান ধর্ষক পুরুষটিকে একটু মারা হলো, পুরুষাঙ্গ ছেচিয়ে দেওয়া হলো না, রাগ হচ্ছে। আমাকে কেউ ধর্ষণ করতে আসলে প্রথমে তো ওর পুরুষাঙ্গ হারাতে হবে, নচেৎ ধর্ষণ করার আগেই খুন করতে হবে।
জানোয়ারটার পুরুষাঙ্গ কেটে হাতে ঝুলিয়ে দিতে পারলে শান্তি লাগতো, মদ্যপ বলেই ধর্ষক এমন ভাবার কারণ নেই! প্রতিটি পুরুষই চিন্তার জগতে ধর্ষণ চিন্তা পোষণ করে, প্রকাশ ভঙ্গি একেক জনের একেক ধরনের। সুতরাং, মূল সমস্যা পুরুষতন্ত্রের। পুরুষদের 'পুরুষতন্ত্র' থাকা গর্বের মনে করে বহু বড় বড় কমিউনিস্টরাও। এরাও কিন্তু চিন্তায় ধর্ষক মনোভাব পোষণ করে। যা ভুলে গেলে চলবে না।
পুরুষতন্ত্র, ভোগতন্ত্র, পুঁজিতন্ত্রের বিরুদ্ধেই লড়তে হবে। রনি হক একটা নাম, অন্য রনি খানদের চরিত্রও বুঝতে হবে। নারী বন্ধুদের কতটা যে দৃঢ়তার অধিকারী হতে হবে তা হয়তো বোঝাতে পারছি না। তবে, লড়তে হবেই, লড়াইটা চালু রাখতেই হবে। আর একই সাথে তথাকথিত মানবতাবাদী নামে অহিংস মনোভাব ত্যাগ করতে হবে, প্রয়োজনে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে হবে। নিজেকে, নিজের জাতিকে রক্ষা করতে হলে ভোগবাদ, পুঁজিবাদ, পুরুষতন্ত্রের সাথে লড়তে হবে।