হটাৎ করেই চোখে পড়ল নবযুগ ব্লগে দাউদ হায়দারের একটি ১৬ লাইনের কবিতা। কবিতার ভাষা আর শব্দগাঁথুনি দেখে কেমন যেন বিশ্বাস হচ্ছিলো না এটিও যে কবিতা হতে পারে। আজ তাই আমার এই লেখা, বলা বাহুল্য এটি একটি প্রতিবাদী পর্যবেক্ষণ, এব্যাপারে আমার মন্তব্য হলো -
দাউদ হায়দার মধ্যযুগীয় সমাজে বসবাস না করলেও তাঁর আচরণ মধ্যযুগীয় আঁতেল দের মতন, বাঙালীরা সাইবার জগতে কতটা এগিয়ে আছেন তা তিনি হয়তো অনুধাবন করতে পারেন নি, কারণ তিনি নিজে এই সামাজিক যোগাযোগ জগৎ এর বাসিন্দা নন, তাঁর নিজের কোনো সামাজিক একাউন্ট ও নেই, তিনি যাকে উদ্দেশ্য করেই লিখুন না কেনো তা আধুনিক প্রগতিশীল সমাজের বিরুদ্ধাচার হয়েছে, সেটা শুধু ভাষা ব্যবহারে নয় মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও নিচু মানের, কারণ তাঁর কবিতার ভাষা "নারীবাদী ছিনাল লেখিকা ভাবছে, ছিনালদলে আমি কী কুলীন?" এই বাক্যটি যদি কবিতার ভাষা হয় তাহলে ধরে নেবো যে সমস্ত নারীবাদীরা 'ছিনাল'? সারা দেশে যখন ধর্ষক দের বিরুদ্ধাচরণ করে প্রগতিশীল মানুষ ফুঁসে উঠেছে তখন দাউদ হায়দারের ভাষা "নারীবাদী ছিনাল লেখিকা ভাবছে, ছিনালদলে আমি কী কুলীন" আর যাইহোক কবিতা হতে পারে না।
এখানে তিনটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে, প্রথমত কোনো এক নারী কবির সাফল্যকে নিজের ইনফেরিয়োরিটি কমপ্লেক্স এ ভুগে, ছিনাল বলে অশ্লীল ভাবে পর্নোগ্রাফী রচনা করেছেন যা তার প্রতিটা শব্দে হিংসার সাথে আরো ফুটে উঠেছে যৌন হতাশা।দ্বিতীয়ত পুরুষতন্ত্রের ঝান্ডা ধারী এই মানুষটি কি কদর্য শব্দ ব্যবহার করে পুরো নারীজাতিকে অপমান করেছে যা পড়লে ঘৃনায় বমন বেরিয়ে আসে, আর তৃতীয়ত ধর্ষককুল কে সমর্থন করে শরীর গরম আঁতেলদের মতো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পর্ন কবিতা রচনা করেছেন দাউদ হায়দার মৌলবাদীদের গালি ব্যবহার করে।
সবশেষে আমার আর একটি পর্যবেক্ষণ, দাউদ হায়দার কে আমি ৩০ বছর ধরে চিনি, তিনি কবিতা লেখেন, আবৃত্তি ও করেন কিন্তু সামাজিক অনুষ্ঠান গুলোতে কখনো কোনো ইস্যুতে চিন্তাশীল আলোচনা করতে দেখিনি, তিনি এখনো হাতে লিখে কবিতা পাঠান প্রকাশক দেরকে অর্থাৎ অফলাইন জগতের মানুষ হঠাৎ করে অনলাইন জগতে সেলিব্রেটি হবার শুরুর ভাষাটা "নারীবাদী ছিনাল লেখিকা ভাবছে, ছিনালদলে আমি কী কুলীন" মন্দ নয় বটে। পর্ণ কবিতা লিখেই যদি সেলিব্রেটি হওয়া যেত তাহলে সব পর্ণস্টাররাই সেলিব্রেটি হতো।
দাউদ হায়দারের কবিতার আর দুটি লাইন:- "তোমার শোনিতগন্ধে যারা দিশেহারা, নিশ্চিত বেজন্মা, হারামি। দোষ বাপের বীর্যে, মায়ের যোনীতে। জানে চিকিৎসকেরা,
ছিনাল কেনো মিথ্যুক, সর্বদা নিম্নগামী"
আরো একটি কথা না বললেই নয়, দাউদ হায়দার কি এবার এই প্রৌঢ় বয়েসে তাহলে মৌলবাদীদের দলেই ভিড়ছেন? "ছিনাল, বেজন্মা, হারামি" এগুলোতো তাদেরই ভাষা, ৭৩ রে আর ৯৩ রে তো মৌলবাদীরাই তাঁকে ও তাসলিমা নাসরিন কে দেশ ছাড়ার আন্দোলনে ওই শব্দই ব্যবহার করেছে।
নারীবাদী ছিনাল লেখিকা
দাউদ হায়দার
অনেক বিখ্যাত ছিনাল দেখিয়াছি পৃথিবীতে
তোমার মতন কেহ নয়, তুমিই সেরা
সকালদুপুরসন্ধ্যায় গ্রীষ্মশীতে
খুঁটে খাও শিশ্ন; তোমার উদরে রেতঃপাত করে মর্দেরা
তুমি সেই নারীবাদী-নামধারী লেখিকা
রক্তেশিরায় মিথ্যে আর ভণ্ডামি ছাড়া কিছু নেই জীবনে।
তোমার খানাখন্দে বিষমাখা পিপীলিকা;
জন্মগত ছিনাল যে-মত উত্তেজিত সহজাত-দংশনে
অনেক নারীবাদী-ছিনাল দেখিয়াছি, তুমিই সেরা।
তোমার শোনিতগন্ধে যারা দিশেহারা, নিশ্চিত বেজন্মা, হারামি।
দোষ বাপের বীর্যে, মায়ের যোনীতে। জানে চিকিৎসকেরা,
ছিনাল কেন মিথ্যুক, সর্বদা নিম্নগামী।
যে-ছিনালের কথা বলছি, কী দরকার নামোচ্চারণে।
নদীর জল ক্রমশ দূষিত, মাছ ও মানুষ দিশাহীন।
বছরে-বছরে তথা সাল ও সনে
নারীবাদী ছিনাল লেখিকা ভাবছে, ছিনালদলে আমি কী কুলীন?