ফরিদ আহমেদ

লেখক, অনুবাদক, দেশে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। দীর্ঘ সময় মুক্তমনা ব্লগের মডারেশনের সাথে জড়িত ছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়ের অনুবাদ করেছেন। বর্তমানে ক্যানাডা রেভেন্যু এজেন্সিতে কর্মরত অবস্থায় আছেন। টরন্টোতে বসবাস করেন।

দাউদ হায়দারকে কি ভীমরতিতে পেলো?

আগে আমরা জানতাম, অল্প বয়স্ক যারা, তরুণ যারা, তারা তাদের বয়সজনিত স্বল্পতা এবং অভিজ্ঞতার অভাবে এবং সেই সাথে রক্ত গরম থাকার কারণে নানা ধরনের অপরিপক্ব কাজ করে, অপরিণত আচরণ করে। পুরনো দিনে বলা হতো ছেলে ছোকরাদের স্বভাবই হচ্ছে পাকানো গণ্ডগোল। এগুলো এখন পুরনো কথাই হয়ে গেছে। আমাদের সমাজে এখন বয়োবৃদ্ধদেরই সমস্যা বেশি। বয়স হবার সাথে সাথে সবার যেন ভীমরতিতে ধরা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে এই ভীমরতি রোগ যে ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে, সেটা যাঁরা একটু সচেতন লোক তাঁরা সবাই জানেন।

অন্যের লেখা নিয়ে, মতাদর্শ নিয়ে, দর্শন নিয়ে, চিন্তা-ভাবনা নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করা কিংবা কঠোর সমালোচনা করাটা সর্বস্বীকৃত একটা বিষয়। কিন্তু, সেই সমালোচনা করতে গিয়ে সবসময় যেটা খেয়াল রাখতে হয়, সেটা হচ্ছে এই সমালোচনা যেন ব্যক্তি আক্রমণে পর্যবসিত না হয়। আক্রমণ যেন নোংরা পর্যায়ে চলে না যায়, যেটা দেখলে মনে হবে ব্যক্তির আদর্শকে নয়, ব্যক্তিটিকেই আক্রমণ করা হচ্ছে।

এই বিষয়টাতে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই সচেতন না। সাধারণ মানুষ সচেতন না হলেও, শিক্ষিত, প্রগতিশীল এবং অগ্রসর অংশ এ বিষয়ে সচেতন থাকবে, সেটাই সবার কাম্য। কিন্তু, সেটা আমরা বেশিরভাগ সময়ই দেখতে পাই না। আমাদের আরো দুর্ভাগ্য যে এই সাধারণ বিষয়টা আমাদের প্রবীণ কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না একেবারেই। ইদানিংকালে একেকজন মুখ খুলছেন, আর তাদের ভেতরের সমস্ত নোংরা আবর্জনা বের হয়ে আসছে মুখ নিঃসৃত হয়ে। সেই গন্ধে তাঁদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না, গরল ঢেলে দিতে পেরে আনন্দিত তাঁরা, উচ্ছ্বসিত তাঁরা। দায় হয়েছে আমাদের। বিকট দুর্গন্ধে টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের জন্য।

কিছুদিন আগে তসলিমা নাসরিন এবং দাউদ হায়দারকে নিয়ে একটা তিন পর্বের সিরিজ লিখেছিলাম আমি। তার শিরোনামের অংশ ছিলো দুই নির্বাসিতের দ্বৈরথ। গতকাল তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে লেখা দাউদ হায়দারের একটা কবিতা দেখার পরে এটাকে আর দ্বৈরথের মতো শোভন কিছু মনে হচ্ছে না। বিলো দ্যা বেল্ট আঘাতকে যেমন মুষ্টিযুদ্ধ বলা যায় না, এ রকম নোংরা এবং অশ্লীল আক্রমণকেও তেমনি সমালোচনা হিসাবে মেনে নেওয়া যায় না, তা সে যতো কাব্য ভাষায় লেখা হোক না কেন।

 নারীবাদী ছিনাল লেখিকা

দাউদ হায়দার

অনেক বিখ্যাত ছিনাল দেখিয়াছি পৃথিবীতে
তোমার মতন কেহ নয়, তুমিই সেরা

সকালদুপুরসন্ধ্যায় গ্রীষ্মশীতে
খুঁটে খাও শিশ্ন; তোমার উদরে রেতঃপাত করে মর্দেরা

তুমি সেই নারীবাদী-নামধারী লেখিকা
রক্তেশিরায় মিথ্যে আর ভণ্ডামি ছাড়া কিছু নেই জীবনে।
তোমার খানাখন্দে বিষমাখা পিপীলিকা;
জন্মগত ছিনাল যে-মত উত্তেজিত সহজাত-দংশনে

অনেক নারীবাদী-ছিনাল দেখিয়াছি, তুমিই সেরা।
তোমার শোনিতগন্ধে যারা দিশেহারা, নিশ্চিত বেজন্মা, হারামি।
দোষ বাপের বীর্যে, মায়ের যোনীতে। জানে চিকিৎসকেরা,
ছিনাল কেন মিথ্যুক, সর্বদা নিম্নগামী।

যে-ছিনালের কথা বলছি, কী দরকার নামোচ্চারণে।
নদীর জল ক্রমশ দূষিত, মাছ ও মানুষ দিশাহীন।
বছরে-বছরে তথা সাল ও সনে
নারীবাদী ছিনাল লেখিকা ভাবছে, ছিনালদলে আমি কী কুলীন?

 

1984 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।