একটি ভয়ঙ্কর বিদ্যুতের রাতে তুমি পথে নেমেছো
তোমার শরীর ভিজে যাচ্ছে জলে
সে-দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই, তুমি পথে নেমেছো
কতদূর যাবে জানো না!
কার কাছে যাবে জানো না!
এত না-জানা, এত কঠিন ধাক্কা তবু যেতে হবে
না, হবে নয়- যেতে হচ্ছে, কারণ তোমার
ঠাঁই মেলেনি তোমারই চেনা রোদ-জলের সংসারে
কিছু ভয়ঙ্কর হাত নিটোল কব্জি ধরে
পথে নামিয়ে দিয়েছে। দরজা বন্ধ
গৃহহীন অজানাপ্রান্তরে তোমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে
অন্ধকারে তখন। তবু প্রকৃতি দেখেছিলো।
আর তাই সহসা পূর্ণিমা উধাও হয়ে ঝড় উঠে এলো
বিদ্যুতের প্রচন্ড শব্দে ফেটে পড়ছে চারদিক
দরজায় বারবার আঘাতেও খুললো না কেউ, অথচ
ভেতরে অনেকে পরিচিত আপন
এতদিন এরাই ছিলো পরিচয় দেবার মতন।
আজ ঝড় রাতের তাণ্ডব ভেদ করে
এক একটি দিন, এক একটি রাত্রি ধাওয়া করছে
দরজার বাইরে অনিশ্চিত ভয়ে কাঁপছো তুমি
কোথায় যাবে এই রাতে, জানো না কিছু!
হরিণের ত্রোস্ত পায় এসে দাঁড়াও টেলিফোন বুথে
কাঁপা হাতে ডায়াল করো, তারপর অপেক্ষা…
প্রাণহীন অপেক্ষা শেষে ওপ্রান্ত ঘুম ভাঙা কণ্ঠে
রিসিভিার উঠাল- হ্যালো…
তুমি চিৎকার করে বলছো- আমি এখন পথে!
শুনতে পাচ্ছো আমি এখন পথে!
ওরা আমাকে বের করে দিয়েছে…
এত রাতে আমি কোথায় যাব!
ওপাশ কিছু শুনতে পায় না, নাকি শুনতে চায় না
কে যে ওপাশে পিতা না ভাই, বন্ধু না প্রেমিক
জানা যায় না
তখনও চিৎকার করছো, শুনতে পাচ্ছো?
ওপাশ কি কিছু একটা বলেছিলো?
অস্পষ্ট কুয়াশা
আমি এখন পথে! আমি এখন পথে!
তোমার আর্তনাদে ভেসে যাচ্ছে মেঘেদের ঘরবাড়ি
বাতাসের উলঙ্গ শরীর হাহাস্বরে ফুঁসে মরছে
তুমি ভিজতে থাকো বিদ্যুতের তুমুল দংশনে
অবিরাম একটানা ঝড়-জল রাত্রি অন্ধকারে...
তারপর?
নোট - প্রিয় পাঠক, এই কবিতার ইতি আমি টানতে পারি নি। আপনারাই বলুন, তারপর কী?