পুষ্পিতা মন্ডল

বর্তমানে প্রবাসী পুষ্পিতা বাংলাদেশ সরকারের সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন।

অপুরা প্রতিবাদ করতে শিখুক

নাম্বার ওয়ান শাকিব খান অপু ইসলাম খানরে ডিভোর্স দিয়েছে। তা এটা নতুন কোনো নিউজতো নয়। এমনই তো হবার ছিলো। কিন্তু যারা লাভ জিহাদ বলে চেচাচ্ছেন আপনাদের সাথে একমত হতে পারলাম না। মানে অনেকে বলছেন যে ভালো হয়েছে, উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে। ধর্ম চেইঞ্জ করেছে তাই ভুগুক এখন এই ধরনের কথার সাথে একমত নই। লাভ জিহাদ কনসেপ্টটা যেমন জঘন্য তেমনি এই উল্লাসও বাজে।

অপু নিজেতো একটা যথেষ্ট জনপ্রিয় স্বাবলম্বী মেয়ে সে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। অবশ্য রিলিজিয়ন চেইঞ্জ করে যদি ভালোবাসা প্রমাণ করা লাগে সেইটা আর আমার কাছে আর ভালোবাসা থাকে না। সেটা আর যাই হোক ভালোবাসার বিয়ে না। তা না হয় তর্কের জন্য ধরে নিলাম অপু স্বইচ্ছায় ভালোবেসে ধর্ম চেইঞ্জ করেছে, ভালোবাসার মানুষের সব আপন করে নিয়েছে। গ্রেট ভালোবাসা তার!

আমার বাবার মুখে বাবার এক টিচারের প্রেমের গল্প ছোটবেলায় শুনেছিলাম। হিন্দু মুসলিম বিয়ে। স্যারের নাম কায়কোবাদ আর বউ এক জমিদার কন্যা মুক্তি মজুমদার। উনারা যার যার ধর্ম ঠিক রেখে সেই যুগে বিয়ে করেছিলেন। উনারা নাকি বাচ্চা নেননি ধর্ম নিয়ে সমস্যা হবে বলে। এটা আমার কাছে ভালোবাসা। কায়কোবাদ স্যারের প্রেম মুক্তি ম্যামের পার্সোনালিটির গল্প আমাকে মুগ্ধ করেছিলো ।

কিন্তু অপুরে আমার বিরক্ত লাগে। তার ধর্ম চেইঞ্জ করার জন্য না। ওটা তার নিজের ব্যাপার। কিন্তু এই মেয়ের লতানো স্বভাব অসহ্য। আমি বিরাট অসহায়, আমার কিছু নাই, আমি শাকিবের জন্য হেন করতে পারি তেন করতে পারি এইসব সারাক্ষন বলে বেড়ানো অসহ্য। ওর যতো ইন্টারভিউ দেখেছি সবটাতে একই কথা। শাকিব তাকে কতো অবহেলা করেছে আর সে শাকিবের জন্য কি কি সহ্য করেছে। তার নাকি একটাই স্বপ্ন শাকিবের সাথে সংসার করা। আর অপর দিকে শাকিব তাকে যতোভাবে অপমান করা যায় তা করে নিজের পৌরষত্বের গৌরব সমুন্নত রেখেছে।

অপুর উচিত ছিলো বহু আগেই শাকিবকে ছেড়ে দেয়া। তা না করে সে শাকিবের পিছে দৌড়িয়েছে। সে আবার নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত নায়িকা দাবি করে। অপু মনে হয় মোসাম্মৎ শাবানার সিনেমার মতো “ওগো তুমি আমাকে যতোই আঘাত করো আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না। আমার জীবন মরন তুমি “টাইপের কথাবার্তায় বিশ্বাসী। মনে হয় ভাবতো ওই সব মুভির নায়কের মতো এখানেও হিরো ফিরবে। কিন্তু আফা জীবনতো মুভি না। তার মতো মেয়েই যদি এতো অপমানের প্রতিবাদ না করে টিভি ক্যামেরার সামনে এসে ফ্যাচফ্যাচ করে কান্দে তবে ঘরে ঘরে নির্যাতিত সাধারণ মেয়েগুলো কি করবে?

শাকিব কি করলো তা নিয়ে কিছু বলার নেই। শাকিবরা এমনই হয়। কিন্তু অপুরা প্রতিবাদ করতে শিখুক, ভালোবাসা আর অপমানের মধ্যে ফারাক করতে জানুক, সব বিকিয়ে দিয়ে ভালোবাসা বন্ধ করুক। সর্বোপরি নিজেকে সম্মান করতে শিখুক। সেদিন অপুর জন্যও ভালোবাসা জানাবো। তার আগে পর্যন্ত তার জন্য খালি করুণাই বরাদ্দ।

3095 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।