সময়টি এরশাদের সময়। আমরা এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আগাগোড়া নিয়োজিত। আমি একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন করি। অনার্স সেকেন্ড ইয়ার। একেবারে ছোট কেউ না। ক্যাম্পাসে মারামারি। একজন ছাত্রনেতা নিহত। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা। দুঘণ্টার ভেতর হল খালি করে দেওয়ার নির্দেশ।
ক্যাম্পাসেই ছিলাম। এক পায়ে স্যান্ডেল আছে আরেক পায়ে নেই। খালি পায়ে দৌড়ে হলে এসে হলের মুখে আসতে না আসতেই দেখি অনেক মেয়ের প্রস্তুতি সমাপ্ত। কোনো রকম ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে বাইরে আসতে আসতে শুনি ট্রেন বন্ধ। যেতে হবে বাসে। রাজশাহী থেকে খুলনা যেতে আমরা বাসে খুব অভ্যস্ত নই। জড়ো হলাম খুলনা যশোর যাত্রীদের সাথে। অনেক যাত্রা বিরতি। অনেক ধরনের বাহন।
অবশেষে রাত বারোটায় খুলনায় পৌঁছুলাম। খালিশপুরে ভাইয়ের বাসায় যেতে হবে। টেলিফোন নেই। তখনও একটি মেয়ের অত রাতে রিকশা চড়ে একা খুলনা বাস স্ট্যান্ড থেকে খালিশপুরে যাওয়া নিরাপদ নয়। দলের দুই বর্ষ সিনিয়র এক ভাই আমাকে পৌঁছে দেবেন।
অনেক রাত। মেয়েদের অভিজ্ঞতা বলে এ যাত্রা সুখকর হয়ে শেষ হবে না। তবু ভরসা, এঁরা আমাদের ক্যাম্পাসের ছেলে। উঠে বসলাম। পায়ের কাছে আমার কালো রঙের ব্যাগটি। আমি রিকশায় যতটা প্রান্তে বসা সম্ভব সে চেষ্টায় নিজের অবস্থান সুস্পষ্ট করলাম।
প্রার্থনা, যাদের সাথে ক্যাম্পাসে দেখা হবে সবসময় তাদের দ্বারা না ঘটুক কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা। রিকশা চলতে শুরু করলেই সে চেপে আসলো আমার দিকে। রিক্সার হুড তুলে দিয়েই আমার পিঠ আঁকড়ে ধরলো। যতটা প্রতিবাদ করা সম্ভব সেভাবে তার হাতটি সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলাম। সে আমাকে জোরে চেপে ধরলো। কোমর পেঁচিয়ে তার হাত আমার বুকের মাংস খুবলে নিতে লাগলো। আরেক হাতে আমার উরু খাবলে নিতে লাগলো। আমার মুখ চেপে ধরে আমার ঠোঁট মুখ যেখানে সুযোগ পেলো কামড়ে ধরলো। আমি ব্যথায় অপমানে অসহায়ত্বে ভয়ে আর্তনাদ করে উঠলাম।