আকাশ মালিক

ব্লগার ও অনলাইন একটিভিস্ট

ধর্ষণঃ নারী কি কোনোভাবে দায়ী?

শিরোনামের প্রশ্নটাকে আরেকটু সহজ করে বলা যাক। Can a woman do anything to incite rape? নারী কি কোনোভাবে ধর্ষণকে উৎসাহিত, অনুপ্রাণীত, উদ্দীপ্ত বা প্রভোক করে? একদম সোজা, তর্কহীনভাবে স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড উত্তর হলো, ‘না’। এর আগে পেছনে কোনো ‘অজুহাত’ ‘কারণ’ ‘যুক্তি’ ‘তবে’ ‘কিন্তু’ নেই। ধর্ষণ একটি অপরাধ, নারী হয় ধর্ষিতা আর পুরুষ হয় ধর্ষক। পুরুষ করলো ক্রাইম, নারী কেনো দোষী হবে? সুতরাং এখানে আর কোনো কথাই নেই। একজন পশ্চিমা রাইটার ও গবেষক এই বিষয়ের উপর রিসার্চ করে একটি আর্টিক্যালে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের উত্তরে তিনি প্রথমেই লিখেছেন ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট আনসার ইজ ‘নো’। এ উত্তরটাও ভুল। এখানে ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট’ শব্দটা থাকা অনুচিৎ। পাল্টা প্রশ্ন আসবে, তাহলে কি অন্য কোনোভাবে উত্তরটা ‘হ্যাঁ’ হওয়ার সুযোগ আছে? না নেই, কোনো সুযোগ নেই।

একজন ব্লগার তার একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাসে উদাহরণ দিয়েছিলেন এরকম; “জঙ্গিরা যখন বলে যে অমুক সুরা পড়ে বা তমুকের বক্তৃতা শুনে উদ্দীপ্ত হয়ে সে জিহাদ করতে নেমেছে, আমরা কিন্তু তখন সেই জঙ্গির কথা বিশ্বাস করি। তাহলে কোনো ধর্ষক যখন বলে যে নারীর সল্প পোশাক তার মধ্যে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি করায় সে ধর্ষণ করেছে, এই কথা আমরা কেনো বিশ্বাস করবো না? একজন তো নয়, বহু মানুষেই বলছে এই কথা”। তিনি আরো বলেছেন, “যখন একই কথা বহুলোকে বলে তখন সেটাকে হেসে খেলে উড়িয়েও দেওয়া যায় না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মনে হচ্ছে যে পোশাক ধর্ষকামী পুরুষের উত্তেজনা সৃষ্টিতে প্রভাব ফেলে থাকতে পারে। হিজাব বা বোরকা পরিহিতা নারীও ধর্ষিতা হয়। এতে কিন্তু প্রমাণ হয় না যে কোনো পার্টিকুলার ধর্ষণের ঘটনাতে পোশাক কোনো ভূমিকা রাখতে পারে না”।

উপরোল্লেখিত তার কথাগুলো শুনে আমি ভেবেছিলাম পরে বোধ হয় তিনি কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্য বা সাইকোলজিক্যাল কিংবা সোসিয়েল সাইন্স এর কোনো গবেষণা রিপোর্ট তুলে ধরবেন। হয়তো দেখাবেন নারীর বিশেষ পোষাক পুরুষের মস্তিষ্কের কোনো কোষ বা ইনএকটিভ ব্রেইন সেলকে একটিভ করে তুলে এ রকম কিছু। যেমন স্পেইনের ষাঁড় খেলা Spanish-bullfighting corrida de toros (literally "running of bulls") ষাঁড়ের সামনে লাল! কাপড় নাচালে তার মাথায় রাগ উঠে যায়, সে ক্ষেপে উঠে সে পাগলের মতো কাপড়ের পেছনে দৌড়ায়। পুরুষের দেহে কি এমন কোনো জিন আছে বা মস্তিষ্কে কি এমন কোনো সেল আছে যে সল্পবসনা নারী দেখলে তার ধর্ষণস্পৃহা জেগে উঠে? নাহ, মনোবিজ্ঞান সমাজবিজ্ঞান জীববিজ্ঞান কোথাও এর সমর্থনে কিছু নেই। আফ্রিকান ট্রাইব সমাজে নারীরা এখনও সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে থাকে। সেখানে তো দিবারাত্রী ধর্ষণ আর ধর্ষণ হওয়ার কথা। বিবস্ত্র আফ্রিকান নারীরা বেঁচে আছে কেমনে? একদিন দেখলাম ফুটবল মাঠের ভেতরে দশ হাজার দর্শকের সামনে উনিশ বছরের সুন্দরী এক শেতাঙ্গীনী উলঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। কই কোনো পুরুষের দন্ড দন্ডয়মান হতে তো দেখলাম না বা কারো মগজের ধর্ষণ সুইচ অন হতে তো শুনলাম না। nudist beach গুলোতে ধর্ষকের মেলা বসতে কোনোদিন শুনি নি। একটুখানি সেক্সি ড্রেস, সামান্য সল্প বসন, একটু বাহু বা উরু কিংবা একটু সাদা ঠ্যাং দেখে যদি পুরুষের মাথা খারাপ হয়ে যায়, তাহলে সম্পূর্ণ উলঙ্গ শরীর দেখলে তো তার আত্ম্যহত্যা করার কথা। এমনটা কোনোদিন হয়েছে? হয় নি।

আমি জানি অনেক দূর্বল অর্থহীন যুক্তি সামনে তুলে ধরা হয় যেমন, রাস্তার দুই পাশের দুই দিকে একজন হিজাবি আর একজন সেক্সি পোষাকী নারী হেঁটে গেলে পুরুষ কার দিকে তাকায়? এর সাথে ধর্ষণের কোনো সম্পর্ক নেই। আসল কথা হলো, ধর্ষকের সামনে আপাদপমস্তক কাপড়ে ঢাকা নারী আর বস্ত্রহীন উলঙ্গ নারী একই অর্থ বুঝায়। আশি বছরের বৃদ্ধা, আঠারো বছরের যুবতি আর দুই বছরের শিশু ধর্ষকের চোখে সবাই সমান।

ধর্ষণকামী পুরুষেরা একবার ভেবে দেখে না, যে কারণে বা অজুহাতে সে নারীকে ধর্ষণ করতে উদ্যত হয় একই কারণ নারীর মাঝেও বিদ্যমান আছে। নারীও ক্রাশ খায়, উত্তেজিত হয় কিন্তু সে পুরুষকে ধর্ষণ করতে ঝাপিয়ে পড়ে না। গায়ের পোষাক যদি ধর্ষণের কারণ হতো তাহলে সল্পবস্ত্রের মাঠের ফুটবলার আর ক্ষেতের চাষীরা নারী কর্তৃক রেইপ থেকে রেহাই পেতো না। অনেক পুরুষ জানেই না বুঝেই না যে, তার মাঝে যেমন যৌন কামনা বাসনা উত্তেজনা আছে, কিছু রিজেক্ট করার গ্রহণ করার স্বাধীনতা বা অধিকার আছে, তেমনি কিছু পছন্দ অপছন্দ করার সাধ ইচ্ছে নারীরও আছে। এই জ্ঞানটুকুই তাদের নেই।

নারী সম্মন্ধে জন্মের পর থেকে সে জেনে এসেছে তাকে শেখানো হয়েছে যে, ‘নারী জগতের শ্রেষ্ট ভোগ্য সামগ্রী, নারী মানব প্রাণী উৎপাদনের মেশিন, নারী শষ্যক্ষেত্র, নারী গুঞ্জাফল, নারী দুধাল গাভী, নারী মশারীর ভেতরে রাখার বস্তু, নারী শয়তানের বেশ ধরতে পারে, নারী কখনো পবিত্র আর কখনো অপবিত্র, নারী নরকবাসিনী, নারী ছলনাময়ী, নারী কামিণী, নারী ছিনাল, নারী বেশ্যা।

এসব শিখিয়েছেন ধর্ম প্রবর্তকগণ আর ধর্মগ্রন্থ রচয়ীতাগণ। (দ্রষ্টব্যঃ মনু, মুহাম্মদ, লুক, মাথিউ) আর ধর্ম প্রচারকারীগণ বলেছেন, নারী তেঁতুল টেঙ্গা, নারী মিষ্টি রসগোল্লা, নারী উন্মুক্ত ঢাকনাহীন মাংস, নারী খোলসহীন চকলেট ললিপপ। পুরুষকে ধর্ষণ কাজে অনুপ্রাণীত করার লক্ষ্যে তারা আরো শিখিয়েছেন, নারী দেখলে যদি পুরুষের শিশ্ন খাড়া না হয় তাহলে বুঝতে হবে সে পুরুষ ধ্বজভঙ্গ বেমারী নপুংসক।(দ্রষ্টব্যঃ রামকৃষ্ণ, মুফতি শাফী) এ জন্যেই আমরা দেখতে পাই, হাসিনার আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের প্রাণপ্রিয় মুফতি শাফীর দেশে ধর্ষণের বাম্পার ফলন।

এবার প্রাসঙ্গিকভাবে বিষয়টার অন্যদিকে আলোকপাত করা যাক। যদি প্রশ্ন করা হয়, Can a woman seduce a man? এখানে উত্তরটা হবে ‘হ্যাঁ’। কিংবা নারী কি তার পছন্দের মানুষকে নিজের করে নিতে বা জীবন সাথী বানাতে নিজেকে আকর্ষিত করে তুলার চেষ্টা করে? এখানেও উত্তরটা হবে ‘হ্যাঁ’। কিন্তু প্রশ্নটা শুধু নারীর বেলা কেনো হবে, পুরুষও তো তা’ই করে। সাজগোজ শুধু নারী করে না পুরুষও করে নারীর কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে। এটা প্রেমের ভালোবাসার মিলনের পবিত্র নির্দোষ আকুতি। নারীর মেকআপ, তার প্রসাধনী সাজ, তার শরীরের অঙ্গভঙ্গী, চোখের ইশারা, তার সল্পবস্ত্র এর কোনোকিছুই ধর্ষণের আহবান বুঝায় না। মালালাম ভাষায় নির্মিত ‘অরু আদার লাভ’ ছবিতে ‘মানিক্যা মাল রাইয়া পুভি’ গানের দৃশ্যে প্রিয়া প্রকাশের চোখ টিপ্পনি সারা দুনিয়ার পুরুষের অন্তর কাঁপিয়ে দিয়েছে। এই ব্লোয়িং কিস, এই চোখ টিপ্পনীর অর্থ, যে দাঁড় করায় ‘ধর্ষণ কামনা’ তাকে অতি শীঘ্র লোকালয় থেকে দূরে কোথাও পাঠিয়ে দেয়া উচিৎ। ধর্ষণের সংজ্ঞা হলো, নারীর ইচ্ছের বিপরীতে তার সাথে সঙ্গম করা। তুমি পরিচিত হও কিংবা অপরিচিত, বন্ধু হও অথবা স্বামী, স্মরণ রাখা উচিৎ, যে মুহুর্তে নারী বলবে ‘নো’ এর মা’নে ‘না’ ফুল ষ্টপ। তুমি যে কোনো কারণে যে কোনোভাবেই উত্তেজিত হও না কেনো, এর বেশি এক চুল সামনে আগানো তোমার জন্যে অপরাধ।

জগতের পুরুষ জাতি মনে রেখো, দুনিয়ার কোনো নারীই কোনোকালে কোনো অবস্থাতে ধর্ষণ কামনা করে না। ধর্ষণ দুনিয়ার সব চেয়ে নিকৃষ্টিতম জঘন্য অপরাধ।

ধর্ষকামী বা রেইপিষ্ট সাধারণত দুই শ্রেণির হয়। প্রথম গ্রুপে আছে মনোবিকৃত, মনোবিকারগ্রস্থ বা মানসিক অস্থিরতাব্যাধিগ্রস্থ psychopathic রেইপিষ্ট। এরা জোরপূর্বক সেক্স করায় আনন্দ বোধ করে, এমন কি বিবাহিত পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে সঙ্গমকালেও এ রকম করে অর্থাৎ যন্ত্রণা দেয়াতেই তাদের সুখ তাদের শান্তি। বল প্রয়োগ করে জোর চালিয়ে অত্যাচার করে যন্ত্রণা না দিয়ে এরা সেক্স উপভোগ করতে পারে না, স্বাভাবিক সেক্সে তাদের সুখ নেই। এই দলে তারাও আছে যারা সুবিধাজনক জায়গায় বা পরিস্থিতিতে নারীকে পেলে শুধু মাত্র তাদের পুরুষত্বের ক্ষমতা দেখানোর লক্ষ্যে ধর্ষণ করতে উদ্দ্যত হয়, হউক সে নারী সুন্দরী কিংবা কুৎসিত, পর্দাবৃত বা সল্পবসনা।

দ্বিতীয় গ্রুপে আছে সুযোগসন্ধানী বা opportunists রেইপিষ্ট। উদাহরণ স্বরুপ; একজন পুরুষের পথচারী এক নারীর সাথে কিছুটা পথ চলা হলো, পরিচয় পরিচিতি হলো, বন্ধুসুলভ কথাবার্তা হলো, কফিবারে গিয়ে চা কফি পান হলো, হাতে হাত রাখা হলো এমন কি গালে চুম্বনও হলো। ইতোমধ্যে পুরুষটির সেক্সুয়েল এম্বিশন বা কামবাসনার পারদ উচ্চমাত্রায় অবস্থান নিলো, মনে মনে ভাবলো অল ক্লিয়ার সিগন্যাল পেয়ে গেছে। একেবারে শেষ মুহুর্তে নারী যখন ‘নো’ বললো, অনুকুল পরিবেশ যখন প্রতিকুলে অবস্থান নিলো তখনই বিপত্তিটা ঘটলো। এদের কাছে নারীর ‘নো’ অর্থের কোনো মূল্য বা ভ্যালু নেই। এরাই অজুহাত হিসেবে যুক্তি দাঁড় করায়, ‘সে তো চাইছিলোই তাই করেছি’। কিন্তু এখানেও পুরুষটি ধর্ষকই আর নারী নির্দোষ। এদের মধ্যে আরেকদল আছে যেমন, প্রেম হয়েছে ভালোবাসা হয়েছে, চিঠিপত্র উপহার লেনদেন হয়েছে ছেলে বিয়ে করতে রাজী মেয়েও রাজী কিন্তু এই মুহুর্তে মেয়ে সেক্স করতে রাজী নয় ব্যস, এতটুকু অগ্রসর হওয়ার পরে আর পেছনে যাওয়া যায় না তাকে ধর্ষণ করতে হবে। এই পুরুষটিও আইনের চোখে ধর্ষক, শাস্তিযোগ্য অপরাধী। একেও নারী থেকে দূরে রাখা উচিৎ। আরেকদল জ্ঞানপাপী লোক আছে এরা নিজে ধর্ষণ করে না কিন্তু পরোক্ষভাবে ধর্ষণ সমর্থন করে। এদের যুক্তি হলো; দেশে Blue film এর অভাব নেই কিন্তু নারীর বড় অভাব, সরকার কাজ দেয় না, আল্লাহ ভাত দেয় না, এ জন্যেই পুরুষ নারীকে ধর্ষণ করে।

সেক্সুয়েল হ্যারাসমেন্ট নিয়ে, উদাহরণ উপমা দিয়ে এখানে আলোচনা করে এ লেখার কলেবর বৃদ্ধি করবো না। এক কথায় বলা যাবে, নারীর শরীরের সাথে সম্পর্কিত তার অপছন্দের কিছু করা ও বলা সেক্সুয়েল হ্যারাসমেন্ট।

এবার রেইপ সংক্রান্ত শত সহস্র কেইসস্ট্যাডি থেকে একটি ঘটনার উল্লেখ করে লেখাটি সমাপ্ত করবো -

“আমি খুব কম শতাংশ নারীদের একজন যারা ধর্ষিতা হয়েছিলেন কোনো অপরিচিত ব্যক্তির দ্বারা। সবাই জানে যে, ধর্ষক হয় কালো কাপড়ে মুখোশপরা, কুৎসিত চেহারার, অজানা অপরিচিত আর লুকিয়ে থাকে রাস্তায় ঝোপের আড়ালে। আসল সত্যটা হলো প্রায় ৮০ পার্সেন্ট ধর্ষকই হয় ভিক্টিমের নিকটাত্মীয় বা পরিচিত। তখন আমার বয়স ছিলো ২২ বৎসর। একদিন অফিসের কাজে কলিগদের সাথে একটি মিটিংয়ে সারাদিন ব্যস্ত ছিলাম যেখানে আমার কয়েকজন বন্ধু পুরুষ ভদ্রলোকও ছিলেন। সারাদিনের ব্যস্ততায় ক্লান্ত অবশ শরীর নিয়ে অফিস থেকে ফিরে এসে আমার ছোট্ট এপার্টমেন্টের সিলিং ফ্যানের নীচে মাথা রেখে সোফায় শুয়ে কিছুক্ষণের জন্যে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। ততক্ষণে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে গেছে। প্রায় ঘন্টা খানেক পরে আমার ঘুম ভাঙ্গে। মাথায় হাত দিয়ে দেখি চুলগুলোতে যেন ল্যাটা লেগে গেছে হাত পা যেন কেমন শুকনো চড়চড়ে হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে বাথরুমে যাওয়ার জন্যে প্রস্তুত হচ্ছি। দরজা খোলা থাকায় সন্ধ্যার অন্ধকারেও বারান্দার বাতির ক্ষীন আলোয় আমার রুমের কিছু অংশ আবছা দেখা যাচ্ছিলো। দেখি  wardrobe এর পাশে ছায়ার মতো একজন মানুষ দাঁড়িয়ে। প্রথমে ভেবেছিলাম জেফ (Jeff ) আমার স্বামী। কিন্তু তার কাজ আজ তো শেষ হওয়ার কথা রাত নয়টায়। গাড়িও তো বাসার সামনে দেখলাম না।

ও নো, এ তো জেফ নয়। হায় ঈশ্বর আমি এ কী দেখছি, এ কে আমি তো চিনি না। খুব ছোট্ট, খুব দূর্বল খুব শর্ট, বাঘের ঝাপটায় দিশেহারা বেহুশ হরিণীর ছোটো বাচ্চার মতো কাতর একটি চিৎকার বেরিয়ে আসে আমার কণ্ঠ থেকে। বিদ্যুতবেগে সে ঝাপিয়ে পড়ে আমার উপর আর ডাক্তারদের মেডিক্যাল রাবার গ্লাবস লাগানো এক হাত দিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে। (সেই গ্লাবসের বিকট গন্ধ এক বছর যাবৎ আমার নাকে বারবার টের পেয়েছি।) সে আমার কানের কাছে তার মুখ লাগিয়ে ফিসফিস করে বললো, ‘চুপ, অন্যথায় আমি আঘাত করবো, একটা কথা বলবি না, যদি বলিস তোকে কেটে টুকরো টুকরো করবো’। তারপর সে আমার টি শার্ট সম্মুখ দিক থেকে ছিড়ে ফেলে আর এই শার্ট দিয়ে মাস্ক বানিয়ে মাথা থেকে আমার মুখ নাক চোখ বেঁধে ফেলে। আস্তে করে পা দিয়ে সামান্য খোলা দরজাটা বন্ধ করে দেয়। এরপর সে আমাকে তার দিকে ঘুরিয়ে নেয়। আমার ব্রা খুলে তা দিয়ে পেছন দিকে আমার দুটো হাত বেঁধে ফেলে। তারপর এখন থেকে সে কী করবে আমাকে কী করতে হবে, গম্ভীর শান্ত কণ্ঠে বলতে থাকে। সে বলে, ‘আমি তোমার সাথে সেক্স করবো, তুমি ভদ্র শান্তভাবে তা করতে দিবে আর এরপর আমরা দুজনে মিলে সবকিছু ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করবো তারপর আমি চলে যাবো। তোমার কিচ্ছুই হবে না তোমাকে আঘাত দেবো না, (যেন রেইপ খুব সুখকর জিনিষ নারী কোনো আঘাত পায় না) যদি তুমি পুলিশ না ডাকো, কারো কাছে ঘটনা প্রকাশ না করো’।

আমার শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থরথর করে কাঁপছে, আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছি না। আমাকে ধীরে ধীরে সে আমার বিছানায় বসিয়ে দেয়। আমাকে শান্ত করার লক্ষ্যে সে আমার সাথে কথা বলতে শুরু করে, আমার ব্যক্তিজীবন নিয়ে প্রশ্ন করে। আমি বুঝে না বুঝে শুধু ‘ইয়েস’ ‘নো’ বলি আর মৃত্যুর মুখোমুখী দাঁড়িয়ে চেষ্টা করি তার কণ্ঠস্বর তার ভাষার এক্সেন্ট বুঝার। না, এ স্বর এ এক্সেন্ট আমার পরিচিত নয়। তার কথা বলার ভঙ্গী তার কণ্ঠস্বর আমার কানে বেজেছে অনেক বছর জাগ্রত এবং ঘুমন্ত অবস্থায়ও। সে আমার গাড়ি বাড়ি কর্মস্থল, ঘটনা তার মা বাবা জানলে কী হবে, আমার আত্মীয়রা জানলে কী হবে, পুলিশ জানলে কী হবে, সব কিছু নিয়ে আলাপ করেছে। এক পর্যায়ে বললো সে নাকি আমাকে স্কুল জীবন থেকে চেনে এবং আমাকে ভালোবাসে কিন্তু আমি তাকে ভালোবাসতাম না, যা ছিলো সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা।

এরপর সে আমার হাতের বাঁধন খুলে দেয়। আমার হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে তার হাতের আঙ্গুল ঢুকিয়ে কিছুটা রোমান্টিকতার ভাব নেয়। তার অভিনয়ে মনে হচ্ছিলো যেন সে কোনো অভিসারে এসেছে। আমার ঠোঁটে চুম্বন দেয়ার জন্যে শার্টে ঢাকা মুখের উপর থেকে কিছুটা আর স্তনের উপর থেকে কিছুটা শার্ট সরিয়ে নেয়। নিকষ কালো অন্ধকার রুমে চোখের উপর শার্ট বাঁধা অবস্থায় আমি তার চেহারার কিচ্ছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। অনুমানিক পাঁচ মিনিট সে আমার উপরে ছিলো। প্রতিটি সেকেন্ড আমার মনে হয়েছে, আমি নরকের আগুনে জ্বলেপুড়ে মরে যাচ্ছি। It hurt me so much because I was dry, মনে হচ্ছিলো আমার শুকনো যোনীপথে যেন সে ছুরি চালাচ্ছে।

আপনারা নিশ্চয়ই অনুমান করতে পারছেন সম্পূর্ণ সময়টাতে আমার মানসিক অবস্থাটা আমার অনুভুতিটা কেমন ছিলো। তার প্রত্যেকটা মুভমেন্ট ছোট্ট কোনো শব্দ আমার কাছে বজ্রধ্বনির মতো হয়েছিলো। প্রতিক্ষণেই ভাবতাম এই বুঝি তীক্ষ্ণ ধারালো ছুরিটা আমার বুক ভেদ করে পিঠের দিকে বেরিয়ে গেলো কিংবা এই বুঝি পিস্তলের গুলিটা আমার কপাল ভেদ করে মাথার ওপাশ দিয়ে বেরিয়ে গেলো। আজ রাতই কি আমার জীবনের শেষ রাত, জেফের সাথে আর কোনোদিন দেখা হবে না, এই ভুবনের আলো আর কোনোদিন চোখে পড়বে না। আমি টের পাচ্ছিলাম যেন, আমার শরীরের সকল জয়েন্ট একে একে খুলে যাচ্ছে সকল মাংশ হাড় থেকে খসে পড়ছে আমি কংকাল হয়ে যাচ্ছি। সে আমার ঘরে ছিলো দুই ঘন্টা, সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। জেফ বাসায় ফেরার কথা নয়টায়।

এরপর সে আমাকে বাথরুমে নিয়ে যায়, শার্ট তখনও আমার মাথার উপরে আর চোখ তখনও ঢাকা। সে আমাকে কোলে করে শাওয়ারের নিচে দাঁড় করিয়ে দেয়। এবার শুধু মাত্র চোখ ঢাকা রেখে সকল আবরণ বন্ধন খোলে দেয়। একজন পঙ্গু বা ডিজেবল মানুষকে যে ভাবে স্নান করানো হয় সে আমাকে সে রকম যতনেই সব কিছু করলো। আমার হাতে সাবান তোয়াল দিয়ে বললো আমি যেন আমার যোনীপথ ভালভাবে পরিষ্কার করে নেই। সে সাবান শাম্পু তোয়াল সবই আমার উপর ব্যবহার করলো, এমন কি শরীরও মুছে দিলো। আমি তার এই অত্যধিক আদরের কারণ প্রথম বুঝতে পারি নি। তারপর আমার গায়ে তোয়াল পরিয়ে আমাকে টয়লেটের কমোডের উপর বসিয়ে দিয়ে বললো, ‘আমি না বলা পর্যন্ত একচুলও নড়াচড়া করবে না’। সে প্রথমে সমস্ত রুম ভালো করে হুভার দিলো, সব জায়গায় স্প্রে ফারফিউম মারলো। এবার বুঝলাম তার আদরের কারণ। তারপর বললো, ‘এখন থেকে দশ মিনিট পরে তুমি বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে, ততক্ষণে আমি এখান থেকে চলে যাবো, তুমি জীবনে আর কোনোদিন আমাকে দেখবে না, যদি পুলিশ না ডাকো, যদি ঘটনা কাউকে না বলো’।

এই দশ মিনিট আমার সারা জীবনের দীর্ঘ সময় ছিলো। দশ মিনিট পরে এই প্রথম আমি মাথার উপর থেকে শার্ট সরালাম, চোখ মেলে তাকালাম। বাথরুম থেকে বেরুতে আমার বড্ড ভয় করছিলো, ভাবছিলাম সেখান থেকে বড় করে গলা ফাটিয়ে একটা চিৎকার দেই। কারণ আমার পুরো বিশ্বাস বেডরুমে ঢুকে দেখতে পাবো সে আমার বিছানায় পিস্তল হাতে বসে আছে আমাকে শুট করার জন্যে। খুব ধীরে ধীরে নিঃশব্দ পায়ে এক ইঞ্চি এক ইঞ্চি করে আমি বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসি। কেউ বেডরুমে নেই, রান্না ঘরেও নেই। আমার মেইকআপ বক্স, জুয়েলারি বক্স, আমার ড্রেসিং কাভার্ড সবই আনটাচড কিচ্ছুই জায়গা থেকে সরে নি কিন্তু বেড শিট, বেড কভার সোফা কভার ও সোফার ছোট বালিশ গুলো মিসিং। আমার পুরো মনে আছে মোবাইলটা সোফার উপরেই রেখেছিলাম। কিন্তু সেটা তো দেখছি না। দৌড়ে টেলিফোনের কাছে এসে দেখি টেলিফোনের তার ছেড়া। তাড়াতাড়ি কাপড় চেঞ্জ করে নেক্সট ডোর নাইভারের এপার্টমেন্টে গিয়ে প্রথমেই পুলিশ কল করি। তারপর মা বাবাকে ও জেফকে ঘটনা জানাই। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ, আমার মা বাবা জেফ সবাই চলে আসেন।

এরপরে যা ঘটলো বা ঘটতে থাকলো তাতে মনে হলো আমি যেন এক ঘূর্ণীবায়ূর মধ্যখানে পড়ে আছি, ঘূর্ণীবায়ূর চক্করে আমার মাথাও ঘুরছে। হসপিট্যাল, ডাক্তার, রেইপ ভিকটিম সার্ভিস, রিপোর্টার সাংবাদিক, টিভি গ্রুপ, সেক্সুয়েল এসল্ট নার্স, কাউন্সিলিং পিউপল, সোসিয়েল সার্ভিস আরো কতো ভলেন্টিয়ার সার্ভিস। প্রথমেই আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় ‘রেইপ ভিকটিম সার্ভিস’ হাসপাতালে। তাদের ড্রাইভার থেকে নার্স, ডিপার্টমেন্টের সকল এতোই এক্সপার্টস, অভিজ্ঞ, দক্ষ প্রফেশোন্যেল ছিলেন যে আমি তাদের অত্যাশ্চর্য নম্রতা বিনয় মমতা আর সেবা দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। প্রথমেই একজন মহিলা আমার ডান হাতের পিঠে এক হাত আর তালুতে অপর হাত নম্রভাবে ধরে বললেন, ‘আই এম স্যরি, আই নো ইট ইজ সো পেইনফুল খুবই বেদনাদায়ক, উই উইল ফাইট টুগেদার, আমরা সম্মিলিতভাবে এর মোকাবিলা করবো। তুমি পুরোপুরি মানসিক ও দৈহিকভাবে সুস্থ হয়ে না উঠা পর্যন্ত আমরা তোমার সার্বক্ষণিক সাথী হয়ে থাকবো, তুমি ভেঙ্গে পড়ো না চিন্তা করো না’। আনন্দে আমার চোখে জল এসে যায়।

সর্ব প্রথম যে কাজটি তারা করেছিলেন, আমার শরীরের ইন্টারন্যেল এক্সট্যারন্যেল চেকআপ। কিন্তু বড় বিরক্ত করেছিলেন পত্রিকা ম্যাগাজিন টেলিভিশন মিডিয়ার লোকেরা। চেকআপ থেকে বেরিয়ে আসার পর হসপিট্যালেই এক মহিলা সাংবাদিক হঠাৎ করে কাগজ কলম নিয়ে এসে আমার সামনে উপস্থিত। ঠোঁটে কড়া লাল লিপষ্টিক হাতে এক ঝাঁক বড় বড় পুতির চুড়ি, চুলের স্টাইল দেখে বুঝলাম এই মাত্র বিউটি পার্লোর থেকে এসেছেন। বললেন, ‘বলুন আপা, সব কিছু বিস্তারিত খুলে বলুন কখন কী ভাবে কী হলো কেমনে হলো’? আমার মন চাইছিলো সাংবাদিক মহিলার হাতের কলমটি তার মুখে গুঁজে দেই। নার্সকে ডেকে এনে বললাম ‘এই মহিলাকে এখান থেকে সরিয়ে নিন আমি একটু ঘুমাবো’।

Sexual assault বিশেষজ্ঞ নার্স যিনি আমার সমস্ত শরীর ভেতর বাহির চেক আপ করেছিলেন তিনি বললেন, ‘বেশ কিছু DNA evidence আমরা পেয়েছি, মিষ্টার কেয়ারফুল অনেক প্রমাণ তোমার শরীরে রেখে গেছেন, শীঘ্রই পুলিশ তাকে ধরতে পারবে’। She said I had some small tears in my vagina from him entering me while I was unlubricated. পরে শুনেছি একই DNA evidence তারা পেয়েছিলেন দু সপ্তাহ আগে ধর্ষিতা একটি মেয়ের vagina থেকে। আমি মনে মনে কামনা করি একদিন কোর্টে এক নজর মানুষটাকে দেখার।

পুলিশ ডিটেক্টিভের উপরও আমার বিরক্তি ছিলো, তারা ঘুরে ফিরে বারবার বলছিলো আমি যেন সব কিছু স্মরণ করার চেষ্টা করি, তারা ঘটনার পুংখানুপুংখ ডিটেইলস আশা করে। এক পর্যায়ে পুলিশ বলে, ‘We want to catch this guy even more than you do’. শুনে আমার মাথাটা বিগড়ে যায়। প্রায় দুই মাস পরে পুলিশ তাকে ধরতে সক্ষম হয়। পুলিশের ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। পুলিশ বলেছিলো আমাকে ধর্ষণের দুই সপ্তাহের ভিতরেই তারা বুঝতে পেরেছিলো মানুষটা কে? কিন্তু পুলিশ তাকে ধরেছে আমার পরে আরো দুই জন মহিলা ও একটি আন্ডার এইজ মেয়েকে ধর্ষণ করার পরে। তারা নাকি তাকে হাতেনাতে ধরতে চায় তাদের শক্ত-সলিড প্রুফ প্রয়োজন।

শেষ পর্যন্ত তার দেখা পেলাম কোর্টে। সেদিন কোর্টে ধর্ষিতা সেই তিনজন মহিলাও উপস্থিত ছিলেন। এর আগে নিউজ পেপারে তার চেহারার স্ক্যাচ ছবি দেখেছি। আজ প্রথম বারের মতো তাকে জীবন্ত দেখলাম আমার নিজের দুটো চোখে, যে চোখে সেদিন আমি তাকে দেখতে পারছিলাম না। আমার বিশ্বাসই হচ্ছিলো না যে, আমার রেইপিষ্ট সে আমার চোখের সামনে? বুকটা কান্নায় ফেটে যাচ্ছিলো, অঝোরে জল নেমে আসলো দু’গাল বেয়ে। পাশে থেকে সেই মহিলাদের ফিসফিস কণ্ঠের কান্নাও শুনতে পাচ্ছিলাম। সমস্ত আদালত জুড়ে এক ভয়ানক নীরবতা এক ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।আমি বড় আন কমফোর্টেবল ফিল করছিলাম। আমাদের মহিলা তিনজনকেই তার প্রতি কিছু বলার সুযোগ দেয়া হয়েছিলো। কান্না ভেজা চোখে আড়ষ্ঠ কণ্ঠে সেদিন তার উদ্দেশ্যে কী বলেছিলাম আজ আর মনে নেই।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমা্র মা বাবা আমার বোন ও স্বামী আমাকে সর্বক্ষণ সাহস যুগিয়েছেন, বিশেষ করে রেইপ ভিক্টিম সার্ভিসের কথা কোনোদিন ভুলার নয়। সকলের সাহায্য সহযোগীতা সমর্থন না পেলে আমি হয়তো কোনোদিনই স্বাভাবিক অবস্তায় ফিরে আসতে পারতাম না। আমি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। মাঝে মাঝে ভাবি, জগতে এতো ভালো মানুষের মাঝে এতো খারাপ মানুষ জন্মে কী ভাবে?

চার মাস পরে এক রাতে বিছানায় জেফকে বললাম, ‘জেফ, তুমি বিরক্ত হচ্ছো না তো আমি যে----। সে আমার ঠোঁটে আলতো করে চুম্বন দিয়ে আমার চোখের উপর চোখ রেখে বলে ‘যতোদিন পর্যন্ত তোমার কাছ থেকে গ্রিন সিগন্যাল না আসছে, আমার কোনোই অসুবিধে হচ্ছে না, তুমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠো আমার জন্যে চিন্তা করো না’। ঘটনার ঠিক ছয় মাস পরে আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকীর রাতে তাকে বললাম, ‘জেফ, আমি রেডি’।

THE FACT REMAINS THAT WHETHER A PERSON TAKES STEPS TO PROTECT THEMSELVES OR NOT RAPE IS NEVER THE WOMAN’S FAULT.

1973 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।