রাহাত হোসেন অনিক(ফাইয়াজ)

লেখক রাহাত একজন এখনও একজন ছাত্র।

পুরুষতন্ত্রের মুখে লাথি দেওয়া এক পুরুষ

আমি অনিক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্তর্ভুক্ত একটা মহাবিদ্যালয় এ ইংরাজিতে অনার্স পড়ছি, আমার কাছে মানবতাই আসল ধর্ম, তাই মানবতার টানে রাজপথে নামি, অসহায়, যারা অধিকার আদায় করতে পারছে না তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি, আমৃত্যু করবো।

#MeToo

যেখানে নিজেই পুরুষ (আগে মানুষ) হয়েও বহুবার molestation এর শিকার হতে হয়েছে। যে বা যারা সরাসরি বা একটু ঘুরিয়ে ধর্ষণ কে সমর্থন করেন বা নিজেই ধর্ষক, যারা নিজের মানসিকতা আড়াল করতে হর হামেশাই বলে থাকেন পোশাক, চলাফেরা, স্বাধীনতা এর জন্যে ধর্ষণ হয়ে থাকে তাদেরকে একটা টাস্ক দিচ্ছি প্রথমে-
সকাল বেলা একটা বোরখা ও পরিপূর্ণ পর্দানশীন হয়ে মিরপুর টু মতিঝিল রুটের বাসে চড়ে দাঁড়িয়ে থেকেন, পিছন থেকে কেউ যদি আপনার গলা, পিঠ ও পশ্চাৎপদ না ছুঁয়ে থাকে তাহলে আমার নাম পরিবর্তন করে যা খুশী রাখবেন, ধর্ষণের,টিজিং এর কারণ পোশাক না, বরং আপনার দুর্গন্ধ যুক্ত মানসিকতা।

এটা চলছে এমনই চলবে, আড়ালে আবডালে হয়েই যাচ্ছে, সঠিক বিচার পাচ্ছি কই? যত প্রতিবাদ করছি, প্রতিকারের পথ খুঁজছি তোতোই বেড়ে যাচ্ছে, কিন্তু কেউ পাশে থাকে না।

এইতো সেইদিন।কাউকে না পেয়ে একা একাই দাঁড়িয়ে থাকলাম একটা স্কুল এন্ড কলেজের সামনে, হাতে লেখা একটা মিডিয়ম সাইজের কাগজ (প্লাকার্ডও বলতে পারেন) নিয়ে, একাই, উদ্দেশ্য ছিলো সচেতন করা, জানানো -এই মুহূর্তে কি করা উচিৎ তাদের… কেউ পাশে দাঁড়াচ্ছিলো না। কেউ না মানে কেউই না। বরং হাসছিল তারা। এক পাগল কে দেখে। যে পুরুষ হয়ে পুরুষতন্ত্রের মুখে লাথি মেরে নারীর পাশে দাঁড়িয়েছে! 

সেতো পুরুষের খাতা থেকে নাম ঘুচাল, তার পাশে দাঁড়ানোর প্রশ্নই উঠে না। ২/৩ ঘণ্টা তাদের হাসিমুখ দেখে বাড়ি ফিরেছিলাম।

আসলে এই সমাজে পুরুষতন্ত্রের শাসন ও শোষনে নারীরা পদে পদে দলিত হচ্ছে এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না, বরং যেই সব পুরুষেরা নারীদের পশে দাঁড়াচ্ছে, চাইছে সমাজে সমতা আসুক, কেউ কারো থেকে কম নয়, মানুষ হিসেবে সবাই জন্মগত ভাবেই স্বাধীন, তাদের কে গালি দেওয়া হচ্ছে হিজড়া, খানকি, বেশ্যা, ছিনাল (আমি অনেক অনেক দুঃখিত এইসব গালি গুলি বর্ণনা করার জন্যে) এগুলা বলে তাদের মতে -তুমি তুমি ধর্ষণ করতে পারছো না, নির্যাতন করতে পারছো না, টিজ করতে পারছো না, পুরুষ হয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কে না বলছো। অতএব তুমি নপুংসক, তুমি পৌরুষ্য হারালে! পুরুষতন্ত্রের হাতে পুরুষেরাও জখম হচ্ছে। তাতে কি থেমে থাকবো? পুরুষতন্ত্রের ধারক ও বাহকেরা তাই মনে করেন? তবে ভুল ভাবছেন। আমি আপনার তন্ত্র কে কেয়ার করছি না মোটেও।

পৃথিবীতে বাঁচতে হলে, চলতে হলে এক সাথেই বাঁচবো, এক সাথেই চলবো। একজন অন্যজনের হয়ে...।

ভালো থাকুক মানুষেরা (অবশ্যই ওরা মানুষ নয়, তাই ওরা বাদে)
জয় হোক মানবতার...

 

2800 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।