নারীরা যখন বার বার যৌন আক্রমনের শিকার হয়, তখন আমার বার বার মনে হয় আসলে এরা কতো দুর্বল! কতো শক্তিহীন! কতো নির্জীব! ১লা বৈশাখ টিএসসিতে যখন কিছু নরপশু দ্বারা নারীরা যৌন আক্রমনের শিকার হচ্ছেন, তখন কিন্তু কোনো নারী তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি, এসেছিল ছাত্র ইউনিয়নের তিন জন সাহসী পুরুষ। লিটন নন্দী, সুমন সেন গুপ্ত, অমিত দে, এরা জীবনের পরোয়া না করে এক ঝাঁক যৌন আক্রমণকারী হায়েনার বিরূদ্ধে প্রতিরোধের দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। শুধু মাত্র মেয়েদের সম্ভ্রম রক্ষার জন্য। নারীদের ইজ্জত রক্ষার দায় কি শুধু পুরুষের? নারীর কি কোনো দায় নেই? তখন ঐ টিএসসিতে হাজার হাজার অন্য নারীরা কি করছিলেন? বসে বসে আঙ্গুল চুষছেন? ললিপপ খাচ্ছেন? ফ্যাশনের বাহার মারাচ্ছেন না? ওখানে কি নারীদের উচিত ছিল না লিটন নন্দী, সুমন সেন, অমিতে দে, দের সাথে সামিল হয়ে যৌন আক্রমনকারীদের শায়েস্তা করার? নাকি আপনাদের মুখের মেকাপ, শাড়ির ভাঁজ, চুলের ভাঁজ খসে পড়বে বলে? নাকি একটু আধটু স্তন-পাছায় চাপ লাগবে বলে?
নারীরা কি আসলেই অবলা? রুগ্ন? শক্তিহীন? তাদের কি প্রতিঘাত করার কোনো ক্ষমতা নেই? ঐ টিএসসিতে শতভাগের পাঁচভাগ নারীও যদি জেগে উঠত, (এরা কি জাগবে, কি প্রতিরোধ করবে, একজনের রুপ দেখে আরেকজন হিংসায় জ্বলে! একজনের যৌন হেনস্তা দেখে আরেকজন মিটি মিটি হাসে, কারন তার পোশাক শালীন বলে) তাহলে ঐ আক্রমনকারীরা প্রানের ভয়ে পালাত।
আবহমান কাল ধরে দেখে আসছি নারীর অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য নারীরা যতটা না সচেতন, তারচেয়ে বেশি সচেতন পুরুষরা। নারী বিরোধী জঘন্য সতীদাহ প্রথাটি উচ্ছেদ করেছিলো কিন্তু একজন পুরুষ। অনেক মেয়েকে দেখেছি, একজন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার ব্যাংকার নারীকে দিনশেষে ভালো রাঁধুনি হতে, পতি সেবা করে একজন সতী নারী হিসেবে গর্বিত হতে। বা ভালো সংসারীর খেতাব পেয়ে উল্লসিত হতে। তো এসব অপদার্থ মুর্খদের নিয়ে কি স্বপ্ন দেখবো আমরা? যে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয়?
এ যুগে কেউ কাউকে অধিকার দেয় না, অধিকার ছিনিয়ে নিতে হয়। নারীরা না পারে অধিকার চাইতে, না পারে অধিকার ছিনিয়ে নিতে। শুধু বলদের মতো খাঁটতে (যেমন- গার্মেন্টসের খাটুনি, সারাদিন সংসারের খাটুনি) পারে। আরেক পাল নারী আছে, যারা সব সময় নারীর পোশাক ও চলাফেরার মধ্যে দোষ খুঁজে বেড়ায়, এরা বলে, ধর্ষনের জন্য নাকি নারীই দায়ী! এরা সবচেয়ে নিকৃষ্ট ইতর নারী। আবার এরা নারী আন্দোলন প্রধানের প্রতিনিধিত্বও করে!
নারীরা চায় তাদের পায়ের তলায় কেউ অধিকার এনে দিক। তারা তো নরম শরম মানুষ। তারা অধিকার চাইবে কি করে? হায়েনা-পুরুষদের মুখোমুখি হয়ে লড়বে কিভাবে? তাদের অতি আকর্ষনীয় স্তন উরু নিতম্বে যদি হাত লেগে যায়! এই কোমলীয় স্থানগুলো আড়াল করার জন্য তারা সদা ব্যাস্ত থাকে, তো যৌন আক্রমন কারী পুরুষদের তারা প্রতিঘাত করবে কোত্থেকে? শুনো গো নারী একটা উপদেশ দিই, কোনো লুইচ্যা পুরুষ যখন তোমার কাপড় টান দিয়ে ছিঁড়ে স্তন উলঙ্গ করবে, তখন তুমি ঐ স্তন ঢাকার চেষ্টা না করে বা স্তনের কথা না ভেবে উল্টো তার অন্ডকোষে লাত্থি কষাও! বা দুই হাত দিয়ে তার অণ্ডকোষ চেপে ধরে জোরেসোরে টিপ দাও। তখন সে তোমাকে মা না ডাকুক, অন্তত খুব করুনভাবে করজোড়ে তোমার কাছে জীবনটা ভিক্ষা চাইবে। ওটাই সবচেয়ে পুরুষের দুর্বল জায়গা। আমি একজন পুরুষ, পুরুষরের দুর্বলতার জায়গাটা আমি জানি। মনে হয় ওটা স্তনের চেয়েও অনেক বেশি স্পর্শতর!
সত্যি বলতে কি, নারীবাদী লেখা লিখতে লিখতে বিরক্ত এসে গেছে। এখন নারীবাদী লেখা লিখতে গা গুলিয়ে ঊঠে। নিজেকে এক ধরনের আহাস্মক মনে হয়। এক কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কতোবার বলা যায়? তবু নারী কেনো সচেতন হয় না? সবশেষে বলি, নারীদের ইজ্জত বা অধিকার রক্ষার জন্য শুধু পুরুষরা লড়াই করলে হবে না, পুরুষরা ঝাপিয়ে পড়লে হবে না, নারীদের ও লড়তে হবে। নারীদের ও ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। নারীদের ও প্রত্যাঘাত করার অভ্যাস অর্জন করতে হবে। তা না হলে নারী স্বাধীনতা জিনিসটা পুর্ণতা পাবে বলে আমার মনে হয় না। তুমি নারী, তোমার স্বাধীনতা, তোমার অধিকার, তোমাকেই সংগ্রাম করে অর্জন করতে হবে। প্রতিবাদী পুরুষরা যদি তোমার পায়ের তলায় স্বাধীনতা এনেও দেয়, তুমি এর মর্ম বুঝবে না! কারন তুমি এই স্বাধীনতা সংগ্রাম করে পাওনি, লড়াই করে পাওনি। তুমি এর মর্ম বুঝবে কি করে? তোমাকে সংগ্রামের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা আদায় করতে হবে, কোনো পুরুষের করুণা ছাড়া! বুঝলা?
আজ থেকে নিজে নিজে বাঁচতে শেখো। তোমাকে যৌন আক্রমণ করার সময় চুপ করে থেকো না, প্রত্যাঘাত করো। তোমাকে রক্ষা করার জন্য কোনো পুরুষ নায়কের মতো উদয় হবে এই অপেক্ষায় বসে থেকো না, যতক্ষন দেহে প্রাণ আছে লড়ে যাও। তোমার দেখাদেখি আরো দশটা মেয়ে শিখবে, প্রতিবাদী হবে। সেই দশটা থেকে শতজন শিখবে, শতজন থেকে হাজারজন শিখবে, হাজারজন থেকে.....