রুখসানা কাঁকন

টেলিকমুনিকেশান এক্সিকিউটিভ US ARMY EUROPE ভিজবাডেন , জার্মানি

৬৮২ টুকরা

চাঁদ  জোছনায়  নেংটো  হযে  হাঁটছিলাম। আমার  বুকে কাপড়  নেই, নিম্নাঙ্গ  খোলা। আমি হাঁটছিলাম অনেক টা গ্রীকদেবীর মতো। অথচ  আমি কখনো  গ্রীকদেবীকে হাঁটতে দেখি নাই। আমার কল্পনার  বাক্স কে ৬৮২  টা  টুকরো  করলেও প্রত্যেকটা  একেকটি  স্বয়ংসম্পূর্ণ গল্প। ৬৮২ অংকের কারণ কি আমি জানি না। বক্ষবন্ধনীর বাইরে আসতে  পেরেছে আমার শরীর। কখনো  প্যারিসের  জীবন্ত  নুড আর্টের মতো সব খুলে দাঁড়াতে  চেয়েছিলাম। আমি নিজেই একটা জীবন্ত আর্ট। পাথরের নারী মূর্তি আমাকে শুধু ডেকে বললো তুমি আমার চেয়ে জীবন্ত  নও। প্রত্যেকটা  টুকরো কাপড়  ছুড়ে  ফেললেও  আমার মতো স্বাধীন না। তুমি ভুল বললে পাথর কন্যা তোমার কোনো হৃপিন্ড নেই, কাম নেই, ঋতু  নেই। তা ঠিক পাথরের নারী মূর্তি অবাক না হয়েই বললো। কিন্তু তোমার হৃদপিন্ডের শব্দ সবাই শুনতে পায় না, তোমার কামের স্বাধীনতা নাই, তোমার ঋতু তুমি শুধু সন্তান প্রসবের মতো জটিল কাজের জন্য। তোমার শরীরের কয়টা দাগ আছে তা অন্য কেউ  গুনে বলে। সে গণনা তে যৌনতা  বেশি থাকে। তোমার শরীর আমার শরীরের মত আলো বাতাস  লাগাতে পারে না। তোমার স্তনের মাপ আর গায়ের রঙে তোমার মহিমা দেখানো হয়। তোমার বুক সন্তানের আহার না তুমি আসলে রাক্ষসের আহার। পাথরের মূর্তির দৃষ্টতায় আমার রাগ হলো না কেনো! আমি যেটুকু ধারণ করেছি এ হৃদয়ে তাতে গর্বের  কিছু নেই। আমি গর্বিত হতে চাই গর্ভবতী নই। আমি সব খুলে প্যারিসের মূর্তির মতো খোলা আকাশের নিচে দাঁড়াতে চাই। আজ যে ব্রত নিয়েছি মনে তার ঘোরে আমি হাঁটছি। আমাকে কাপড় খুলে দেখতে চায় যে পুরুষের দল তারা আজ আমাকে নেংটো  দেখছে না। আমি  আমার স্তন মুঠো করে দাঁড়াচ্ছি না।  আমার কোনো লজ্জাও নেই। আমি যে নেংটো হতে পেরেছি সেই লজ্জায় আজ পুরুষের নিমাঙ্গে  উত্তেজনা হারিয়ে ফেলেছে। আমার শরীরে কি বস্ত্র উঠবে সেই সম্মেলনে তারা বসতে চাইছে না। দাঁড়ি, টুপি, হিজাব ধর্মগ্রন্থ কারো অভিমান হচ্ছে না। আমার নেংটো হয়ে হেঁটে যাবার ধৃষ্টতায়  চাঁদ  জোছনা আরো জ্বলে উঠেছে। আমি এখন একটা সেলফি তুলব।

3873 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।